Tuesday, 31 August 2010

ঝড় কেড়ে নিল আনা ফ্রাঙ্কের সেই কাঠবাদাম গাছ


‘ফুলে ফুলে ছেয়ে গিয়েছিল আমাদের কাঠবাদাম গাছটি। পাতায় পাতায় ভরে উঠেছিল সারা গাছ। গত বছরের চেয়ে আরও সুন্দর হয়ে উঠেছিল এটি।’ হূদয়স্পর্শী ডায়েরি লিখে দুনিয়াজুড়ে নাম কেনা কিশোরী আনা ফ্রাঙ্ক তার প্রিয় কাঠবাদাম গাছ সম্পর্কে এই বর্ণনা দিয়েছিল।

 
নেদারল্যান্ডের রাজধানী আমস্টারডামে আনা ফ্রাঙ্কের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে এত দিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছিল গাছটি। সম্প্রতি ঝড়ের আঘাতে ভেঙে পড়েছে প্রায় ১৫০ বছরের পুরোনো এই গাছটি।

আমস্টারডামে যে বাড়িতে আনা ফ্রাঙ্ক থাকত, তা এখন জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষিত। ওই জাদুঘরের একজন মুখপাত্র জানান, প্রচণ্ড বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে ঐতিহাসিক কাঠবাদাম গাছটি দেশলাই কাঠির মতো ভেঙে পড়েছে। মাটি থেকে এক মিটার উঁচুতে কাণ্ডটি দুই টুকরো হয়েছে। গাছটির ভাঙা অংশ পাশের একটি দেয়ালের ওপর পড়লেও আনা ফ্রাঙ্কের বাড়িটি রক্ষা পেয়েছে।

আনা ও তার পরিবারের সদস্যরা নাৎসি সদস্যদের কবল থেকে রক্ষা পেতে বেশ কয়েকবার এই গাছের তলে আশ্রয় নেয় বলে তার ডায়েরিতে উল্লেখ রয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ দর্শনার্থী গাছটি দেখতে আসত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের নাৎসি বাহিনী ইহুদি নিধন শুরু করলে ইউরোপের ইহুদিরা সংকটে পড়ে। ওই সময় আনা ফ্রাঙ্ক নামের এক ইহুদি কিশোরী তার প্রাত্যহিক ঘটনাবলি লিপিবদ্ধ করে, যা পরবর্তী সময়ে ‘আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি’ নামে খ্যাতি লাভ করে।

জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানায়, গাছটির কাণ্ডে ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা দিলে ২০০৭ সালে এটি ভেঙে পড়তে যাচ্ছিল। এরপর কাণ্ডের চারপাশে ইস্পাতের কাঠামো দিয়ে গাছটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালানো হয়।

জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানায়, নিলামকারীরা এর মধ্যে গাছটি কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ দাম উঠেছে এক কোটি ২০ লাখ ৭২ হাজার মার্কিন ডলার। রয়টার্স।

Prothom-alo
তারিখ: ৩১-০৮-২০১০

No comments:

Post a Comment