দুই টনেরও বেশি ওজনের দক্ষিণ আফ্রিকান খনিজ শিলা থেকে এক আউন্সের মতো সোনা পাওয়া যায়।
রাজা জেমস অনূদিত বাইবেলে এক হাজার ৭০০ রত্ন ও দামি পাথরের কথা উল্লেখ আছে।
ক্যালিফোর্নিয়ায় সোনা আবিষ্কৃত হয়েছে—এই খরব আটলান্টিকের উপকূলে পৌঁছাতে ছয় মাসেরও বেশি সময় লেগেছিল। ১৮৪৮ সালে সোনা আবিষ্কৃত হয়েছিল, কিন্তু জন আগাস্টাস শাটার ও জেমস মার্শাল আবিষ্কারের খবর গোপন রাখার চেষ্টা করেন। ’৪৯-এর শুরুতে সোনার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে গেলে ডিসেম্বরে এসে প্রেসিডেন্ট পক সোনা আবিষ্কারের ঘোষণা দেন।
ব্যক্তিগত মজুদের সবচেয়ে বেশি সোনার পরিমাণ ভারতে। আনুমানিক পাঁচ হাজার টন, যার মূল্য প্রতি আউন্সে ৬০০ ডলার হিসাবে প্রায় ৭২ বিলিয়ন ডলার। এমনিতে অনুমোদিত আমদানির পরিমাণ প্রায় শূন্য, কিন্তু ভারতীয়রা বেআইনিভাবে প্রতিবছর প্রায় ৬০ থেকে ৭০ টন সোনা তাদের ভান্ডারে জমা করে।
আইজ্যাক নিউটন ফিলোসফারস স্টোন খুঁজে বের করতে যথেষ্ট সময় নষ্ট করেন, তাঁর ধারণা ছিল ওই স্টোন দিয়ে সোনা তৈরি করতে পারবেন।
১৯০৫ সালের প্রথম দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ার কাছে দুই নম্বর প্রিমিয়ার মাইনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হিরা, যার ওজন ছিল তিন হাজার ১০৬ ক্যারেট। সাধারণ রেজিস্টার্ড মেইলে হিরেটাকে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়। রাজা সপ্তম এডওয়ার্ড এই হিরা দেখে বিস্মিত হয়ে বলেন, ‘আমি যদি ওটাকে রাস্তায় দেখতে পেতাম তাহলে কাচের খণ্ড মনে করে লাথি দিয়ে ফেলে দিতাম।’ কালিনান নামে পরিচিত এই হিরে থেকে পরে পাঁচটি হিরে তৈরি করা হয়। সবচেয়ে বড় দুটি ৫৩০ ক্যারেট স্টার অব আফ্রিকা এবং ৩১৭ ক্যারেটের কালিনান ২, এখন ব্রিটিশ রাণির মুকুটের রত্ন।
ধাতুর মধ্যে সোনা দুর্লভতম হলেও বিশ্বে সোনাই প্রথম আবিষ্কৃত হয়।
মধ্যযুগীয় কিছু রসায়নবিদ সিসা থেকে সোনা তৈরির চেষ্টা করেন, তাঁদের এই চেষ্টা যদি সফল হতো তাহলে সেটা হতো একটা অসাধারণ বৈজ্ঞানিক সাফল্য, কিন্তু এটা একই সঙ্গে ডেকে আনত অর্থনৈতিক সংকটও। এছাড়া অতিরিক্ত সোনা সরবরাহের জন্য মূল্যও পড়ে যেত।
১৫৩২ সালে ফ্রান্সিসকো পিজারোর পেরু অভিযানের সময় স্প্যানিশ সেনারা কবুতরের ডিমের সমান বড় বড় পান্না খুঁজে পান। সত্যিকার পান্না ভাঙে না—এই ভুল ধারণা থেকে তাঁরা হাতুড়ি দিয়ে ওগুলোতে আঘাত করেন এবং ভেঙে যাওয়ার পর ধরে নেন, তাঁরা যে পাথর পেয়েছেন এগুলো রঙিন কাচ ছাড়া আর কিছুই নয়।
সোনা এত নমনীয় যে মাত্র এক আউন্স সোনাকে পিটিয়ে একটি পাতলা ফিল্মে (এক ইঞ্চির ২,৮২,০০০ ভাগের এক ভাগ) পরিণত করা যায়, যা ১০০ বর্গফুট জায়গা দখল করবে কিংবা টেনে ৫০ মাইল লম্বা একটি চমত্কার সূক্ষ্ম তারে পরিণত করা যাবে।
‘টিস্যু পেপার’-নাম এসেছে এর প্রথম ব্যবহার থেকে। এর আকার এমনভাবে করা হয়েছিল যাতে সূক্ষ্ম সোনায় বোনা কাপড়ের টিস্যু তৈরি হতে পারে।
মানসা মুস (১৩১২-৩৭) যখন মক্কায় হজের জন্য তাঁর বিশাল আফ্রিকান সাম্রাজ্য মালি ত্যাগ করেন, তখন তাঁর চলার পথে অস্বাভাবিক কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়: তাঁর ৬০ হাজার অনুচরের খাবার সংগ্রহ করাটা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তিনি কায়রোতে পৌঁছে কেনাকাটায় এত সোনা ব্যয় করেন যে সেখানকার সোনার মূল্য অস্বাভাবিক কমে যায়, অর্থনীতি প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছায়।
ভাষান্তর: হাসান খুরশীদ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment