Tuesday, 31 August 2010

ঝড় কেড়ে নিল আনা ফ্রাঙ্কের সেই কাঠবাদাম গাছ


‘ফুলে ফুলে ছেয়ে গিয়েছিল আমাদের কাঠবাদাম গাছটি। পাতায় পাতায় ভরে উঠেছিল সারা গাছ। গত বছরের চেয়ে আরও সুন্দর হয়ে উঠেছিল এটি।’ হূদয়স্পর্শী ডায়েরি লিখে দুনিয়াজুড়ে নাম কেনা কিশোরী আনা ফ্রাঙ্ক তার প্রিয় কাঠবাদাম গাছ সম্পর্কে এই বর্ণনা দিয়েছিল।

 
নেদারল্যান্ডের রাজধানী আমস্টারডামে আনা ফ্রাঙ্কের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে এত দিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছিল গাছটি। সম্প্রতি ঝড়ের আঘাতে ভেঙে পড়েছে প্রায় ১৫০ বছরের পুরোনো এই গাছটি।

আমস্টারডামে যে বাড়িতে আনা ফ্রাঙ্ক থাকত, তা এখন জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষিত। ওই জাদুঘরের একজন মুখপাত্র জানান, প্রচণ্ড বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে ঐতিহাসিক কাঠবাদাম গাছটি দেশলাই কাঠির মতো ভেঙে পড়েছে। মাটি থেকে এক মিটার উঁচুতে কাণ্ডটি দুই টুকরো হয়েছে। গাছটির ভাঙা অংশ পাশের একটি দেয়ালের ওপর পড়লেও আনা ফ্রাঙ্কের বাড়িটি রক্ষা পেয়েছে।

আনা ও তার পরিবারের সদস্যরা নাৎসি সদস্যদের কবল থেকে রক্ষা পেতে বেশ কয়েকবার এই গাছের তলে আশ্রয় নেয় বলে তার ডায়েরিতে উল্লেখ রয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ দর্শনার্থী গাছটি দেখতে আসত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের নাৎসি বাহিনী ইহুদি নিধন শুরু করলে ইউরোপের ইহুদিরা সংকটে পড়ে। ওই সময় আনা ফ্রাঙ্ক নামের এক ইহুদি কিশোরী তার প্রাত্যহিক ঘটনাবলি লিপিবদ্ধ করে, যা পরবর্তী সময়ে ‘আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি’ নামে খ্যাতি লাভ করে।

জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানায়, গাছটির কাণ্ডে ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা দিলে ২০০৭ সালে এটি ভেঙে পড়তে যাচ্ছিল। এরপর কাণ্ডের চারপাশে ইস্পাতের কাঠামো দিয়ে গাছটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালানো হয়।

জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানায়, নিলামকারীরা এর মধ্যে গাছটি কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ দাম উঠেছে এক কোটি ২০ লাখ ৭২ হাজার মার্কিন ডলার। রয়টার্স।

Prothom-alo
তারিখ: ৩১-০৮-২০১০

উইকিলিকসের খ্যাপা সাংবাদিক

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের চেয়ারটা নরম চামড়ায় তৈরি। ব্যাপারটা তাঁর পছন্দ নয়। কারণ রাগ বা জেদ প্রকাশের জন্য জোরে ঘুষি মারার মতো যথেষ্ট শক্ত নয় এর হাতলটা। কীভাবে তাঁর ওয়েবসাইট আফগান যুদ্ধের ৯০ হাজারেরও বেশি গোপন প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারল সে কাহিনি বলার জন্য চেয়ারে বসতে বসতে টাইম সাময়িকীর সাংবাদিককে কথাটা জানালেন অ্যাসাঞ্জ। ‘আমি চাই দড়াম করে একটা ঘুষি মেরে বলব, “শালার বাস্টার্ড সব! সবগুলোকে গুঁড়িয়ে দেব”!’


হাসিমুখে কথাটা বললেও অ্যাসাঞ্জের হাবভাব দেখে বোঝা মুশকিল, তিনি রসিকতা করছেন কি না। দীর্ঘদেহী, কিছুটা ম্রিয়মাণ, শুভ্রকেশধারী অ্যাসাঞ্জের গলার স্বর খুবই মৃদু। এতটাই যে মাঝেমধ্যে তাঁর কথা শোনাই মুশকিল। অথচ এর মাত্র এক দিন আগে এই ব্যক্তি তাঁর ওয়েবসাইটে আফগান যুদ্ধের গোপন কাগজগুলো প্রকাশ করে হইচই ফেলে দিয়েছেন।


আর কোনো বিষয়ই ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের বিব্রত করার মতো আনন্দ দিতে পারে না অ্যাসাঞ্জকে। গোপন নথি প্রকাশ করতে সবাইকে সহায়তা করার জন্য ২০০৬ সালে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। নাম না প্রকাশের শর্তে যে কেউ সেখানে সরকার বা বড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তথ্য ফাঁস করে দিতে পারে।


উইকিলিকসে সম্প্রতি তুলে ধরা হয়েছে আফগান যুদ্ধের ছয় বছরের বিস্তারিত বর্ণনা। বেসামরিক লোকজনের হতাহত হওয়া ও পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং তালেবানের সম্ভাব্য আঁতাত-সম্পর্কিত নানা প্রতিবেদনসহ বহু নথিপত্র প্রকাশ করা হয়েছে ওয়েবসাইটটিতে। আফগান যুদ্ধের এই দলিলপত্র এখন পর্যন্ত উইকিলিকসের সবচেয়ে বড় স্কুপ।


নিজেকে একাধারে সাংবাদিক, প্রকাশক ও উদ্ভাবক মনে করেন অ্যাসাঞ্জ। তিনি বলেন, ‘আমি এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবনের চেষ্টা করছি যা গণমাধ্যমের ওপর সেনসরশিপ সমস্যার সমাধান করবে।’


উইকিলিকসে কাজ করেন ছয়জন পূর্ণকালীন স্বেচ্ছাসেবী। ওয়েবসাইটটির রয়েছে প্রায় এক হাজার এনক্রিপশন বিশেষজ্ঞ। সাইটটির প্রধান সার্ভার সুইডেনে। তবে তারা কাজ করে বিশ্বজুড়ে। গত কয়েক বছরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রকাশ করা হয়েছে ওয়েবসাইটটিতে। এর মধ্যে রয়েছে গুয়ানতানামো বে-র ক্যাম্প ডেলটায় বন্দীদের ওপর যে বিধিনিষেধ তার ম্যানুয়াল ও লন্ডনভিত্তিক কোম্পানি ট্রাফিগুরার একটি অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন। ট্রাফিগুরার ওই প্রতিবেদনে আফ্রিকার উপকূলে সম্ভাব্য বিষাক্ত দ্রব্য ফেলে আসার বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। এ ছাড়া ২০০৭ সালে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে মার্কিন বাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে চালানো হামলায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স-এর দুই সাংবাদিকের নিহত হওয়ার ভিডিওচিত্র প্রকাশ করা হয়।


কেনিয়ার দুর্নীতিসংক্রান্ত নথিপত্র প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পুরস্কার জিতেছে উইকিলিকস।


অ্যাসাঞ্জ বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের রক্ষা করার তাড়নাই তাঁর প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। তাঁর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘সরকারের স্বচ্ছতা দুর্নীতি হ্রাস করে।’ যেসব সরকার তথ্য গোপন করে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পছন্দ করেন তিনি। অ্যাসাঞ্জ বলেন, তিনি ‘বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই’ পছন্দ করেন।


তবে অ্যাসাঞ্জ আসলেই কতটা সাংবাদিকতা করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ক্রমবর্ধমান সুখ্যাতি ও কুখ্যাতি সত্ত্বেও উইকিলিকসের মুখপাত্র শুধু তিনি নিজে। আর যাঁরা কাজ করছেন তাঁদের দায়বদ্ধতার বিষয়টি স্পষ্ট নয়। ওয়েবসাইটটিতে যেসব নথিপত্র প্রকাশ করা হয়, তা সব সময় হুবহু প্রকাশ করা হয় না। ২০০৭ সালে বাগদাদে মার্কিন হেলিকপ্টার হামলায় প্রাণহানির যে ভিডিওচিত্র প্রকাশ করা হয়েছিল তা ছিল কিছুটা সম্পাদিত। ওই ভিডিওচিত্রটি সমালোচনার মুখে পড়েছিল। কারণ, হেলিকপ্টার থেকে যাদের ওপর হামলা চালানো হয় তাদের একজনের হাতে ছিল রকেটচালিত গ্রেনেড লঞ্চার। উইকিলিকসে প্রকাশিত চিত্রে ওই লোকের ছবি বাদ দেওয়া হয়।


অনেকেই অ্যাসাঞ্জের কাজের পদ্ধতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। রিপোর্টার্স কমিটি ফর ফ্রিডম অব দ্য প্রেসের নির্বাহী পরিচালক লুসি ডালগ্লিশ বলেন, ‘এটা সাংবাদিকতা নয়, এটা হচ্ছে তথ্য বিতরণ। এতে আমি উদ্বিগ্ন।’ তিনি আরও বলেন, কোনো স্পর্শকাতর তথ্য প্রকাশ করার আগে সাংবাদিকেরা ব্যাপক আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে যান। যদিও উইকিলিকস বলছে, তারাও একই কাজ করছে।


নাগরিকত্বে অস্ট্রেলিয়ান ৩৯ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জ ঘুরেফিরে চারটি জায়গায় থাকেন। নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে জায়গাগুলোর নাম নির্দিষ্ট করে জানাননি তিনি। ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্নে পদার্থবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেছেন অ্যাসাঞ্জ। তরুণতর বয়সে তিনি ছিলেন হ্যাকার।


১৯৯১ সালে ২০ বছর বয়সে কানাডিয়ান টেলিকম কোম্পানি নরটেলের মাস্টার টার্মিনাল হ্যাক করেন অ্যাসাঞ্জ। এ ঘটনার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৬টি অভিযোগ স্বীকার করে নেন অ্যাসাঞ্জ। আরও ছয়টি অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। বিচারক অ্যাসাঞ্জের ‘বুদ্ধিদীপ্ত কৌতূহলের’ প্রশংসা করেন। শেষ পর্যন্ত তাঁকে সামান্য জরিমানা করা হয়।


সেই হ্যাকারের স্বভাব একেবারে ত্যাগ করেননি অ্যাসাঞ্জ। গোপন আস্তানা থেকে কাজ করেন। তিনি নিশ্চিত সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারির মধ্যে রয়েছেন। ভ্রমণের সময় তাঁর পেছনে নাকি গোয়েন্দা লেগে থাকে।


আফগানিস্তান-সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করার যুক্তি তুলে ধরে অ্যাসাঞ্জ বলেন, অন্যের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদানের অধিকার প্রত্যেকেরই রয়েছে। তিনি আরও বলেন, মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনী এ বিষয়টি পরিষ্কার করেছে যে যা ঘটছে জনগণের সামনে তা তুলে ধরার অধিকার রয়েছে প্রকাশকদের।

সূত্র : টাইম
আরিফ মোহাম্মদ তারিক হাবিব

তারিখ: ২৭-০৮-২০১০
Prothom-alo

কেজো কয়েকটি ওয়েবসাইট

হাতের নাগালে ইন্টারনেট থাকলে অনেক কাজই সহজ হয়ে যায়। দেশে বসে নিজেদের দরকারি এমন অনেক কিছুই মেলে ই-দুনিয়ায়। কৃষিকাজ, ব্যবসার খবর থেকে শুরু করে যুদ্ধাপরাধীদের বিভিন্ন তথ্য, জেলাভিত্তিক তথ্য ছাড়াও নানা ধরনের সুবিধা নিয়ে ইন্টারনেটে আছে দেশি বেশ কিছু ওয়েবসাইট। দরকারি এবং কাজে লাগে এমন কিছু ওয়েবসাইট সম্প্রতি জাতীয় ই-কনটেন্ট ও উন্নয়নের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি পুরস্কারও পেয়েছে। পুরস্কৃত ও প্রশংসিত এমন কয়েকটি কেজো ওয়েবসাইট নিয়ে এ প্রতিবেদন।

ওয়েবসাইটে কাজের তথ্য

কৃষিপ্রধান দেশের সাধারণ কৃষকদের প্রতিনিয়ত প্রয়োজন হয় নানা তথ্যের। সমস্যাসহ সমাধানের বিভিন্ন বিষয় রয়েছে কৃষিভিত্তিক ওয়েবসাইট রুরাল ইনফো বিডিতে (www.ruralinfobd.com)। উইন ইনকরপোরেটেডের তৈরি এ সাইটে কৃষিবিষয়ক নানা তথ্য পাওয়া যাবে। ‘গ্রামীণ মানুষের জন্য নির্ভরযোগ্য তথ্যভান্ডার’ স্লোগানে চালু হওয়া এ ওয়েবসাইটে রয়েছে কৃষিবিষয়ক তথ্য, যার মধ্যে পাওয়া যাবে বিভিন্ন ফসল সম্পর্কে নানা তথ্য। এ ছাড়া রয়েছে নতুন ব্যবসায়িক ভাবনাসহ নাগরিক সেবাবিষয়ক নানা তথ্য। কৃষিতে সফল ব্যক্তিদের কথা ছাড়াও কৃষি খাতে কাজ করা নানা সমস্যার সমাধানও জানা যাবে। এসবের পাশাপাশি কৃষিবিষয়ক সর্বশেষ তথ্যাদিও জানা যাবে এ ওয়েবসাইট থেকে। উইন ইনকরপোরেটেডের প্রধান নির্বাহী কাশফিয়া আহমেদ জানান, ২০০৬ সালে চালু হওয়া এ সাইটে সাধারণ কৃষিভিত্তিক তথ্যের পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদের কৃষিবিষয়ক সমস্যার সমাধান। কৃষিবিষয়ক পূর্ণাঙ্গ এ সাইটটিতে শিগগিরই নতুন বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কৃষি বিষয়ে আরেকটি তথ্যসমৃদ্ধ ওয়েবসাইট হচ্ছে ই-কৃষক (www.ekrishok.com)। ‘কৃষি তথ্য নেয় যারা, কৃষিকাজে সফল তারা’ স্লোগানে তৈরি এ সাইটটির উদ্দেশ্য হচ্ছে কৃষকদের কৃষিবিষয়ক নানা তথ্য ও পরামর্শসেবা প্রদান করা। তথ্যকেন্দ্রের তথ্য ও পরামর্শ কৃষিকাজে প্রয়োগ করার মাধ্যমে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ করে কৃষিকাজে উপকৃত হচ্ছেন অনেক কৃষক। কৃষিকাজে যেমন রয়েছে নানা সমস্যা, তেমনি রয়েছে সম্ভাবনা। পোকার আক্রমণ, ফসলের রোগসহ নানা সমস্যা সমাধানের সহজ পদ্ধতি হচ্ছে সমস্যাটি আগে চিহ্নিত করা, তারপর এর সমাধান বের করা। সঠিক সময়ে সমস্যাটি চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারলে একজন কৃষক ফসলের তথা আর্থিক ক্ষতি থেকে বাঁচতে পারেন। পাশাপাশি উন্নত বীজ ব্যবহার করে কিংবা সঠিক মাত্রায় পরিবেশবান্ধব সার, কীটনাশক প্রয়োগ করে একজন কৃষক জমির ফলন বৃদ্ধি করতে পারেন। এসব সমস্যা ও এর সমাধান পাওয়া যাবে এ সাইটে। সফল কৃষকদের নানা তথ্যের পাশাপাশি রয়েছে জেলাভিত্তিক বিভিন্ন পণ্যের তথ্যভান্ডার, যেখানে জানা যাবে কৃষি উপকরণসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য। সাইটটি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব আইসিটি ইন ডেভেলপমেন্ট।

স্বাধীনতা যুদ্ধের নানা তথ্যের সমৃদ্ধ একটি তথ্যভান্ডার হচ্ছে জেনোসাইড বাংলাদেশ (www.genocidebangladesh.org) ওয়েবসাইটটি। বাংলাদেশ জোনোসাইড আর্কাইভ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গণহত্যাবিষয়ক একটি অনলাইন মহাফেজখানা।এখানে মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শীর বিবৃতিসংবলিত দলিল উপস্থাপন করা হয়েছে। যুদ্ধকালীন সময়ের ভিডিওচিত্র, ছবি, যুদ্ধাপরাধীদের অপরাধের সব তথ্য, গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দলিলপত্র নিয়ে বিশেষ গ্রন্থাগার, আর্কাইভ, বই, পেপার কাটিংসহ নানা তথ্য পাওয়া যাবে এ সাইটে। সাইটটি ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি বাংলায়ও রয়েছে। বাংলাদেশ জেনোসাইড আর্কাইভ এর নির্মাতা।

গুরুত্বপূর্ণ দরকারি তথ্য নিয়ে রয়েছে বাজার বিডি (www.bazzarbd.com) ওয়েবসাইট। সাউথ এশিয়া করপোরেশনের তৈরি এ ওয়েবসাইটে ইন্টারনেটে বিভিন্ন জিনিস কেনাকাটার সুযোগ রয়েছে।এ সাইটে বই, আসবাবপত্র, প্রযুক্তি পণ্যসহ নানা ধরনের প্রয়োজনীয় পণ্য কেনা যাবে। এ সাইটটিতে বিনা মূল্যে সদস্য হয়ে কেনাকাটার জন্য রয়েছে বাজার বিডি নামের বিশেষ কার্ড। বিভিন্ন মূল্যের এ কার্ড দিয়ে কেনাকাটার কাজটি সহজে করা যাবে। পণ্য কেনার পর ক্রেতার কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থাও রয়েছে এ সাইটে।

যোগাযোগের জন্য প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর ও ঠিকানা পাওয়ার সুবিধা নিয়েও রয়েছে ওয়েবসাইট। সিলেটের নানা তথ্য দিয়ে চালু হয়েছে তথ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট সিলেট ডিরেক্টরি (www.sylhetdirectory.com)। অনলাইন নির্দেশিকার মতো এ ওয়েবসাইটটিতে সিলেট এবং এর আশপাশের জেলাগুলোর ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান, সাইবার ক্যাফে, কম্পিউটার বাজারের তথ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, যোগাযোগব্যবস্থা, হোটেলসহ বিভিন্ন সেবাভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগের খোঁজ পাওয়া যাবে। সিলেটভিত্তিক এ ডিরেক্টরিতে ভিন্ন ভিন্ন বিভাগে পাওয়া যাবে গুরুত্বপূর্ণ ফোন নম্বরসহ যোগাযোগের ঠিকানা।

সাইটটির সিস্টেম অ্যানালিস্ট নাজমুল ইসলাম বলেন, সিলেটভিত্তিক সব ধরনের তথ্য ইন্টারনেটে যাতে সহজে পাওয়া যায় সে জন্যেই এ ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। এখানকার ব্যবসাসহ অন্য কার্যক্রমগুলো সহজে জানার বিষয় তুলে ধরতেই তৈরি এ সাইটের মাধ্যমে সিলেট-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রয়োজনীয় নম্বর ছাড়াও পাওয়া যাবে ঠিকানা।

ব্যবসাসংক্রান্ত নানা তথ্য নিয়ে রয়েছে ওয়েবসাইট ব্যবসার খবর (www.byabsharkhobor.com)। ব্যবসা শুরু করার বুদ্ধি-পরামর্শ থেকে শুরু করে এর জন্য শুরুতে প্রয়োজনীয় মূলধন জোগাড়ের বিভিন্ন পদ্ধতি জানা যাবে এ ওয়েবসাইট থেকে। পণ্য কেনাবেচার বিভিন্ন পরামর্শ ছাড়াও এ সাইটে টাকা জোগাড় করার ভিডিওচিত্রও রয়েছে! ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী যাঁরা এবং ব্যবসার বড় করতে চান, তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যাবে এ ওয়েবসাইটে। ব্যবসা শুরুর এবং ব্যবসা পরিচালনার সব রকমের তথ্যভিত্তিক সমাধানের পাশাপাশি এ সাইটে বিভিন্ন ব্যবসার, বিশেষ করে কৃষিভিত্তিক পণ্যের বিস্তারিত পর্যালোচনাও রয়েছে। সাইটটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিসেন্টার নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক শহীদউদ্দিন আকবর জানান, গত বছরের শেষের দিকে চালু হওয়া এ ওয়েবসাইটটি মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ব্যবসায় আগ্রহী প্রান্তিক অঞ্চলের গ্রামীণ জনপদের কথা ভেবে তৈরি করা। ব্যবসাসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ সহজে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতেই সাইটটিতে ব্যবসাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় যোগ করা হয়েছে।

Prothom-Alo
নুরুন্নবী চৌধুরী

তারিখ: ২৭-০৮-২০১০

যা কিছু প্রথম

সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে শক্তিশালী, সবচেয়ে দ্রুতগামী—এ রকম যাবতীয় রেকর্ডধারীরই একটি সাধারণ পরিণতি হচ্ছে একসময় পেছনে পড়ে যাওয়া। কারণ, আজ হোক, কাল হোক, কেউ না কেউ এই রেকর্ডধারীদের পেছনে ফেলবেই। কিন্তু যা কিছু প্রথম, তা সব সময়ই প্রথম। হতে পারে, প্রথম আবিষ্কৃত তথ্যটা হয়তো পরে দেখা গেল প্রথম নয়, তারও আগে কিছু আছে। কিন্তু সেটিও হবে প্রথম, কাজেই প্রথম চিরকালই প্রথম।

সংবাদপত্র

প্রথমদিকের নিয়মিত বের হওয়া সংবাদপত্রগুলো আমাদের এখনকার মতো ছিল না। এগুলো প্যাপিরাস পাতার ওপর হাতে লেখা হতো। তারপর সেগুলো পরিবেশকসহ দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তি কিংবা পর্যটক যাঁরা ঘরে বসে খবর জানতে ইচ্ছুক, তাঁদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হতো। এ ধরনের সংবাদপত্রের প্রচলন সম্ভবত প্রথম শুরু হয় গ্রিক নগরগুলোতে। যেমন— আলেকজান্দ্রায় এ ধরনের সংবাদপত্র ছিল, গ্রিক ভাষায় লেখা এসব সংবাদপত্র খ্রিষ্টপূর্ব ৩২৩ শতক-পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত হতো। খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতকে লাতিন ভাষায় লিখিত পত্রিকা বিলি হতো পুরো রোম সাম্রাজ্যে।

দৈনিক সংবাদপত্র

পূর্ববর্তী সংবাদপত্রগুলোর ধারাবাহিকতায়ই খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতক থেকে পঞ্চম খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে কোনো এক সময়ে প্রকাশিত হতে শুরু করে বিশ্বের প্রথম দৈনিক সংবাদপত্রটি। এটির নামও ছিল সাদামাটা: Acta Diurna বা ‘দ্য ডেইলি নিউজ। রোম সরকার এটি প্রকাশ করত। এটা অনেকটা এখনকার দৈনিকগুলোর মতোই ছিল। সংবাদ, সিনেটের প্রধান আলোচ্য বিষয়, গুরুত্বপূর্ণ মামলা-মোকদ্দমা, সরকারি ঘোষণা, অর্থনৈতিক সংবাদ, জন্ম-মৃত্যুর ঘোষণা, খেলাধুলা ইত্যাদি ঠাঁই পেত এই পত্রিকায়। সম্পাদক, কেরানি, প্রতিবেদকসহ দৈনিকটির বেশ বড় একটি স্থায়ী কর্মীবাহিনীও ছিল।

ছাপার হরফে প্রথম সংবাদপত্র

হান রাজ শাসনের সময় রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি কর্মচারীদের জন্য টিপাও নামের একটি সংবাদপত্র প্রকাশিত হতো। চীনের মিঙ রাজত্বের সময় প্রকাশিত হতো দ্য কাইইউয়ান জা বাও নামের সংবাদপত্র, এটি ছাপার হরফে প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র হিসেবে সবচেয়ে শক্ত দাবিদার। কাইইউয়ান জা বাও-এর প্রকাশনা ৭১৩ থেকে ৭৪১ খিষ্টাব্দ পর্যন্ত বজায় ছিল। হাতে লেখা, সিল্কের ওপর ছাপা এই পত্রিকাটিও সরকারি কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ ছিল কেবল। এই সংবাদপত্রের একটি সংখ্যা এখনো সংরক্ষিত আছে।

সংবাদ সংস্থা

ফ্রান্সে ১৮৩৫ সালে চার্লস হাভাস নামের এক ব্যক্তি প্রথম সংবাদ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদকেরা তাঁদের সংবাদপত্রের জন্য সংবাদ সংগ্রহ করতেন এই সংবাদ সংস্থা থেকে।

ম্যাগাজিন

বিশ্বের প্রথম ম্যাগাজিনের প্রথম ইস্যুটির নাম ছিল জার্নাল অব দ্য লার্নার্ড। ১৬৬৫ সালের জানুয়ারিতে প্যারিসে এটি প্রকাশিত হয়। এতে বাজারে আসা নতুন বইয়ের বর্ণনা, বিজ্ঞান ও মানবকল্যাণবিষয়ক প্রতিবেদন, আদালত বা বিশ্ববিদ্যালয়সংক্রান্ত বিশেষ বিশেষ লেখা ঠাঁই পেত।


সূত্র : দ্য পেঙ্গুইন বুক অব ফার্স্ট

 ভাষান্তর: ইসরাত জাহান

ধনরত্নের কাহিনি

 দুই টনেরও বেশি ওজনের দক্ষিণ আফ্রিকান খনিজ শিলা থেকে এক আউন্সের মতো সোনা পাওয়া যায়।

 রাজা জেমস অনূদিত বাইবেলে এক হাজার ৭০০ রত্ন ও দামি পাথরের কথা উল্লেখ আছে।


 ক্যালিফোর্নিয়ায় সোনা আবিষ্কৃত হয়েছে—এই খরব আটলান্টিকের উপকূলে পৌঁছাতে ছয় মাসেরও বেশি সময় লেগেছিল। ১৮৪৮ সালে সোনা আবিষ্কৃত হয়েছিল, কিন্তু জন আগাস্টাস শাটার ও জেমস মার্শাল আবিষ্কারের খবর গোপন রাখার চেষ্টা করেন। ’৪৯-এর শুরুতে সোনার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে গেলে ডিসেম্বরে এসে প্রেসিডেন্ট পক সোনা আবিষ্কারের ঘোষণা দেন।


 ব্যক্তিগত মজুদের সবচেয়ে বেশি সোনার পরিমাণ ভারতে। আনুমানিক পাঁচ হাজার টন, যার মূল্য প্রতি আউন্সে ৬০০ ডলার হিসাবে প্রায় ৭২ বিলিয়ন ডলার। এমনিতে অনুমোদিত আমদানির পরিমাণ প্রায় শূন্য, কিন্তু ভারতীয়রা বেআইনিভাবে প্রতিবছর প্রায় ৬০ থেকে ৭০ টন সোনা তাদের ভান্ডারে জমা করে।


 আইজ্যাক নিউটন ফিলোসফারস স্টোন খুঁজে বের করতে যথেষ্ট সময় নষ্ট করেন, তাঁর ধারণা ছিল ওই স্টোন দিয়ে সোনা তৈরি করতে পারবেন।


 ১৯০৫ সালের প্রথম দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ার কাছে দুই নম্বর প্রিমিয়ার মাইনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হিরা, যার ওজন ছিল তিন হাজার ১০৬ ক্যারেট। সাধারণ রেজিস্টার্ড মেইলে হিরেটাকে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়। রাজা সপ্তম এডওয়ার্ড এই হিরা দেখে বিস্মিত হয়ে বলেন, ‘আমি যদি ওটাকে রাস্তায় দেখতে পেতাম তাহলে কাচের খণ্ড মনে করে লাথি দিয়ে ফেলে দিতাম।’ কালিনান নামে পরিচিত এই হিরে থেকে পরে পাঁচটি হিরে তৈরি করা হয়। সবচেয়ে বড় দুটি ৫৩০ ক্যারেট স্টার অব আফ্রিকা এবং ৩১৭ ক্যারেটের কালিনান ২, এখন ব্রিটিশ রাণির মুকুটের রত্ন।


 ধাতুর মধ্যে সোনা দুর্লভতম হলেও বিশ্বে সোনাই প্রথম আবিষ্কৃত হয়।


 মধ্যযুগীয় কিছু রসায়নবিদ সিসা থেকে সোনা তৈরির চেষ্টা করেন, তাঁদের এই চেষ্টা যদি সফল হতো তাহলে সেটা হতো একটা অসাধারণ বৈজ্ঞানিক সাফল্য, কিন্তু এটা একই সঙ্গে ডেকে আনত অর্থনৈতিক সংকটও। এছাড়া অতিরিক্ত সোনা সরবরাহের জন্য মূল্যও পড়ে যেত।


 ১৫৩২ সালে ফ্রান্সিসকো পিজারোর পেরু অভিযানের সময় স্প্যানিশ সেনারা কবুতরের ডিমের সমান বড় বড় পান্না খুঁজে পান। সত্যিকার পান্না ভাঙে না—এই ভুল ধারণা থেকে তাঁরা হাতুড়ি দিয়ে ওগুলোতে আঘাত করেন এবং ভেঙে যাওয়ার পর ধরে নেন, তাঁরা যে পাথর পেয়েছেন এগুলো রঙিন কাচ ছাড়া আর কিছুই নয়।


 সোনা এত নমনীয় যে মাত্র এক আউন্স সোনাকে পিটিয়ে একটি পাতলা ফিল্মে (এক ইঞ্চির ২,৮২,০০০ ভাগের এক ভাগ) পরিণত করা যায়, যা ১০০ বর্গফুট জায়গা দখল করবে কিংবা টেনে ৫০ মাইল লম্বা একটি চমত্কার সূক্ষ্ম তারে পরিণত করা যাবে।


 ‘টিস্যু পেপার’-নাম এসেছে এর প্রথম ব্যবহার থেকে। এর আকার এমনভাবে করা হয়েছিল যাতে সূক্ষ্ম সোনায় বোনা কাপড়ের টিস্যু তৈরি হতে পারে।


 মানসা মুস (১৩১২-৩৭) যখন মক্কায় হজের জন্য তাঁর বিশাল আফ্রিকান সাম্রাজ্য মালি ত্যাগ করেন, তখন তাঁর চলার পথে অস্বাভাবিক কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়: তাঁর ৬০ হাজার অনুচরের খাবার সংগ্রহ করাটা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তিনি কায়রোতে পৌঁছে কেনাকাটায় এত সোনা ব্যয় করেন যে সেখানকার সোনার মূল্য অস্বাভাবিক কমে যায়, অর্থনীতি প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছায়।

 ভাষান্তর: হাসান খুরশীদ

Wednesday, 18 August 2010

পিনাক্লিয়েট ডাক্সন


নির্মাণশৈলীর গুণে সেরা ভবন নির্বাচন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোভিত্তিক কাউন্সিল অন টল বিল্ডিংস অ্যান্ড আরবান হ্যাবিট্যাট।


অবস্থান: সিঙ্গাপুর

উচ্চতা: ৫৩৫ ফুট

নকশাকার: এআরসি স্টুডিও আর্কিটেকচার ও আরবানিজম।

কক্ষ: এক হাজার ৮৪৮টি ।

বিশেষত্ব: এটির ২৬ ও ৫০ তলাজুড়ে ফুলের বাগান রয়েছে।

Monday, 16 August 2010

সাংসদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে হাইকোর্টের রুল....... লগে কিসু লারেলাপ্পা গান

সাতক্ষীরা-৪ আসনের সাংসদ এইচ এম গোলাম রেজার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ কেন আদালতে উপস্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সনদ উপস্থাপনে ব্যর্থ হলে তাঁর সদস্য পদ বাতিলেরও কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, আদালত তাও জানতে চেয়েছেন।



চার সপ্তাহের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।


আজ সোমবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও সৈয়দা আফসার জাহান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রুল জারি করেন।


নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি-সমর্থিত মহাজোট প্রার্থী গোলাম রেজা মনোনয়নপত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন, এমন অভিযোগে স্থানীয় গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জি এম শফিউল আজম রিট আবেদন করেন। রিটে গোলাম রেজার সংসদের সদস্য পদ বাতিলেরও আবেদন করা হয়।


রিট আবেদনকারীর কৌসুঁলি কাজী আকতার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনের হলফনামায় গোলাম রেজা মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তিনি অষ্টম শ্রেণী পাস। কিন্তু হলফনামায় তিনি উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন এবং সনদ হারিয়ে যাওয়ায় তা উপস্থাপন করা যায়নি বলে হলফনামায় উল্লেখ করেন।


আদালত ওই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সনদ উপস্থাপনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং তা উপস্থাপনে ব্যর্থ হলে সদস্য পদ বাতিলের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
প্রথম আলো নিজস্ব প্রতিবেদক
তারিখ: ১৬-০৮-২০১০

বাঙাল দেশে সনদপত্র যোগাড় করতে একটা সাংসদএর কয় মিনিট লাগব?

কিন্তু কথা এইটা না কথা হইলো যারা আমাগো আইন বানায় তারা যদি নুন্যতম শিক্ষিত না হয় তাইলে আমরা আর বড় পাশ দিয়া কি করুম? কম পাশ দিয়া যদি সাংসদ হইয়া কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া যায়, ক্ষমতা দুই ঠেন্গের মাঝখান দিয়া দৌড়াদৌড়ি করে. আর বড় পাশ দিয়া আমরা খালি ব্লগাইতে থাকুম। আসলেই দুনিয়াটা লারেলাপ্পা...................

রাজনীতিবিদ + ধর্মবিদ = ???

এট্টু আগে এক বড় ভাইয়ের লগে ফোনেইতেসিলাম। কথায় কথায় এক ইন্ডিয়ান স্বামীর/বাবা'র কথা আইলো। সবাই জানে ইন্ডিয়ান বাবারা ইদানিং কত সভ্য কাম (!) করতাসে। বড়ভাই মানুষ বহুত ভালা. কিন্তু ১৭ ঘন্টা রোজা রাইক্কা মাথার সিস্টেমে গিট্টু লাইগ্গা গেসে। এমনিতে গালিবাজি করেন না কিন্তু এই ধর্মবিদের কথা যখন শুরু হিল তখন ভাইজানের মুখের ব্রেঁক গেসে ফেল হইয়া। পেট খালি কইরা গালি মারসে কিন্তু এর মাঝে একটা বহুত জটিল কথা কইসে যেইটা না পোস্টাইয়া পারলাম না । ঐটা হইলো - রাজনীতিবিদ আর ধর্মবিদ দুই শালায় ধর্ষক; একটা ধর্ষণ করে দেশরে আরেকটা ধর্ষণ করে ধর্মরে । আমার কথাটা খুব মনে ধরসে। আপনাগো কি মনে লয়?

Monday, 9 August 2010

Jainul Abedin's Potarit

Ghandi by Shabuddin

Wisdom Quotes

The act of compassion begins with full attention, just as rapport does. You have to really see the person. If you see the person, then naturally, empathy arises. If you tune into the other person, you feel with them. If empathy arises, and if that person is in dire need, then empathic concern can come. You want to help them, and then that begins a compassionate act. So I'd say that compassion begins with attention.

- Daniel Goleman


People love to talk but hate to listen. Listening is not merely not talking, though even that is beyond most of our powers; it means taking a vigorous, human interest in what is being told us. You can listen like a blank wall or like a splendid auditorium where every sound comes back fuller and richer.

- Alice Duer Miller


If it's very painful for you to criticize your friends -- you're safe in doing it. But if you take the slightest pleasure in it, that's the time to hold your tongue.

- Alice Duer Miller


The greatest degree of inner tranquility comes from the development of love and compassion. The more we care for the happiness of others, the greater is our own sense of well-being.

- Tenzin Gyatso, 14th Dalai Lamat


Do unto others 20% better than you would expect them to do unto you, to correct for subjective error.

- Linus Pauling


Facts are the air of scientists. Without them you can never fly.

- Linus Pauling


I am part of the sun as my eye is part of me. That I am part of the earth my feet know perfectly, and my blood is part of the sea. There is not any part of me that is alone and absolute except my mind, and we shall find that the mind has no existence by itself, it is only the glitter of the sun on the surfaces of the water.

- D. H. Lawrence

Power without love is reckless and abusive, and love without power is sentimental and anemic.

- Martin Luther King, Jr.


I never did give them hell. I just told the truth, and they thought it was hell.

- Harry S Truman


Violence can only be concealed by a lie, and the lie can only be maintained by violence.

- Aleksandr Solzhenitsyn


Do your little bit of good where you are; it's those little bits of good put together that overwhelm the world.

- Bishop Desmond Tutu


A hero is no braver than an ordinary man, but he is brave five minutes longer.

- Ralph Waldo Emerson


Relationship is the substance of our connections: things like family or blood relatives, as well as covenant relationship like marriage or adoption. Even beyond that, relationship can also be defined by association (church family, workplace, neighborhoods, students, etc.), or just the frequency in which we connect with people (if I see someone often, then I might say I have a relationship with them).

- Dan Lentz


You never really understand a person until you consider things from his point of view.
(from the character Atticus Finch)

- Harper Lee


A question that sometimes drives me hazy: am I or are the others crazy?

- Albert Einstein

Saturday, 7 August 2010

কম্পিউটার ভাইরাস

 ১৯৪৯ সালে ইলিনয়স বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া এক বক্তৃতায় হাঙ্গেরিয়ান-আমেরিকান গণিতবিদ জন নিউম্যান কম্পিউটার ভাইরাসের প্রথম তাত্ত্বিক ধারণা দেন। অবশ্য কম্পিউটার ভাইরাস শব্দটি তখনো প্রচলিত হয়নি। পরে জনের এই ধারণা থিওরি অব সেলফ রিপ্রডিউসিং অটোমাটা নামে প্রবন্ধাকারে প্রকাশিত হয়।

 সর্বপ্রথম কম্পিউটার ভাইরাসটির নাম এল্ক কনার। ১৯৮২ সালে একটি অ্যাপল-২ কম্পিউটারের মাধ্যমে রিচার্ড স্কেন্টা নামের ১৫ বছর বয়সী বালক ভাইরাসটি তৈরি করে।

 কম্পিউটার ভাইরাস এমন এক ধরনের প্রোগ্রাম, যা নিজে নিজেই কপি হতে পারে এবং কম্পিউটারকে আক্রান্ত করে।

 একটি কম্পিউটার ভাইরাস কোনো নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বা ফ্লপি ডিস্ক, সিডি, ইউএসবি ড্রাইভ ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে অন্য কম্পিউটারে ছড়াতে পারে। এ ছাড়া ভাইরাসগুলো কোনো নেটওয়ার্ক ফাইল সিস্টেমকে আক্রান্ত করতে পারে, ফলে অন্য যে কম্পিউটার এই সিস্টেমটি ব্যবহার করে, সেগুলোও আক্রান্ত হতে পারে।

 অনেক ভাইরাস কম্পিউটারের সরাসরি কোনো ক্ষতি না করলেও নিজেদের অনেক কপি তৈরি করে, যা লেখা, অডিও ও ভিডিও বার্তার মাধ্যমে অনাহূতভাবে ঘন ঘন কম্পিউটারের পর্দায় উপস্থিত হয়। এ ছাড়া এগুলো স্বাভাবিক প্রোগ্রামগুলোর প্রয়োজনীয় মেমোরি দখল করে রাখে। ফলে কম্পিউটার ধীরগতির হয়ে পড়ে।

উইকিপিডিয়া অবলম্বনে: সামসুল আলম

Thursday, 5 August 2010

দুপেয়ে এক মেষশাবক

মেষের চার পা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু চীনের শানডং প্রদেশে দুই মাস আগে মাত্র দুই পা নিয়ে জন্মাল এক মেষশাবক। পেছনের দুই পা নেই। দেখে তো আক্কেলগুড়ুম মালিক কুই জিনজিউর।



জিনজিউ বলেন, ‘তাঁর খামারে একই সঙ্গে দুটি মেষশাবকের জন্ম হয়। প্রথমটি হূষ্টপুষ্ট ও স্বাভাবিক ছিল। অন্যটি শুয়ে ছিল ঘাসের ওপর। পরে এটির মাত্র দুই পা দেখে অবাক হয়ে যাই। তবে জন্মের পরদিন সকালে মেষশাবকটি দুই পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়। প্রথমদিকে ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারছিল না। কিন্তু এখন পেছনের অংশ উঁচিয়ে দুই পায়ে দিব্যি চলতে পারে।’


জিনজিউ বলেন, ‘মেষশাবকটি প্রচণ্ড সাহসী। ওর ইচ্ছাশক্তি অদম্য। মাত্র দুই পা নিয়ে এটি অন্য মেষশাবকের মতোই স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছে।
 
অরেঞ্জ অনলাইন।

Tuesday, 3 August 2010

দীর্ঘায়ু মানুষ দেশে দেশে

গ্রিসের উত্তর এজিয়ান রাজ্যের আইসেরিয়া দ্বীপে বিশ্বের বেশির ভাগ নব্বই-ঊর্ধ্ব মানুষের বাস, যা সারা বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ। এই দ্বীপ এলাকা পাহাড়সমৃদ্ধ। ফলে চলাফেরায় নিয়মিত ব্যায়ামের কাজটি হয়ে যায়। তা ছাড়া এখানকার বাসিন্দাদের অভ্যাসই হলো বাগান করা। তারা প্রচুর ফলমূল, শাক-সবজি, অলিভ ওয়েল খায়। সেই সঙ্গে পান করে প্রচুর ভেষজ চা।

নিকোয়া পেনিনসুলা কোস্টারিকার বেশ পুরোনো শহর। এখানেও দীর্ঘায়ু মানুষের সংখ্যা অন্য যেকোনো অঞ্চলের চেয়ে বেশি। গবেষকেরা মনে করেন, এখানকার বাসিন্দাদের খাদ্যতালিকায় শাকসবজির প্রাধান্য, শারীরিক পরিশ্রম এবং পরস্পরের মধ্যকার শক্ত সামাজিক বন্ধন এ দীর্ঘায়ুর কারণ।

ইতালির সার্দেনিয়ানরা ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্যাভ্যাসের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এখানকার ছোট্ট শহর ওভোড্ডার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য তাদের প্রতিবেশীদেরও ঈর্ষার কারণ। এখানকার অধিকাংশ নারী-পুরুষ শতবর্ষে পা রাখতে সক্ষম হন। গবেষকদের ধারণা, এখানকার বাসিন্দাদের পারস্পরিক ঘনিষ্ঠ আন্তরিক সম্পর্কই এ দীর্ঘায়ুর রহস্য।

জাপানের ওকিনাওয়াবাসীর বয়স যেন পৃথিবীর অন্য অঞ্চলের মানুষের চেয়ে ধীরে বাড়ে। আর এ জন্য সব কৃতিত্ব সয়াবিন ও ফলমূলের। পরিমাণে কম খাওয়ার অভ্যাসটাও তাদের তরুণতর থাকার পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। ওকিনাওয়াবাসী মাথাপিছু প্রতিদিন গড়ে ১২০০ ক্যালরি খাবার খায়।

দীর্ঘায়ু লাভের ৫ তরিকা

১. প্রচুর ফল ও শাকসবজি খান। শাকসবজি ও ফলমূল থেকে প্রয়োজনীয় ক্যালরি আহরণে সচেষ্ট হও—এটা হোক প্রতিদিনের শ্লোগান।

২. দীর্ঘায়ু লাভ করা অঞ্চলের বাসিন্দাদের খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে পছন্দের খাবার হিসেবে সয়াবিন, গ্রিন বিন কিংবা ব্ল্যাক বিনজাতীয় শস্যকণা প্রথম পছন্দ।

৩. ধূমপান বর্জন করুন

ধূমপান বর্জনসংক্রান্ত কোনো উপদেশেই যদি আপনার আস্থা না থাকে, তবে বিশ্বের দীর্ঘজীবী মানুষগুলোর প্রতি নজর দিন। আপনি ক্যানসারের হোতা সিগারেট ত্যাগ করুন, দীর্ঘজীবী হবেন।

৪. পরিবারকে সবার আগে ঠাঁই দিন

অবসরের মুহূর্তগুলো বাবা-মা, সন্তান, জ্ঞাতি ভাইবোন কিংবা অন্য আত্মীয়স্বজন নিয়ে হইচই করে কাটান। এটা আপনাকে দীর্ঘজীবী হতে সাহায্য করবে।

৫. নিয়মিত ব্যায়াম করুন

কর্মক্ষম দীর্ঘ জীবনের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা দরকার। ঘুরে ঘুরে বাজার করা কিংবা সাঁতারও হতে পারে ব্যায়াম।

 
 ইশরাত জাহান, সূত্র: লাইফ ম্যাগাজিন

যা কিছু প্রথম

সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে শক্তিশালী, সবচেয়ে দ্রুতগামী এ রকম যাবতীয় রেকর্ডধারীরই একটি সাধারণ পরিণতি হচ্ছে একসময় পেছনে পড়ে যাওয়া। কারণ, আজ হোক, কাল হোক, কেউ না কেউ এ রেকর্ডধারীদের পেছনে ফেলবেই। কিন্তু যা কিছু প্রথম, তা প্রথমই থেকে যায়। হতে পারে প্রথম আবিষ্কৃত তথ্যটা হয়তো পরে দেখা গেল প্রথম না, তারও আগে কিছু আছে। কিন্তু সেটিও হবে প্রথম, কাজেই প্রথম চিরকালই প্রথম।


এনসাইক্লোপিডিয়া

মারকাস টেরেনটিয়াস ভ্যারো (১১৬—২৭ খ্রিষ্টপূর্ব) ছিলেন সে সময়কার রোমের সবচেয়ে যোগ্য ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তি। তিনি প্রথম দুটি পূর্ণাঙ্গ এনসাইক্লোপিডিয়া রচনা করেন। এর একটি ছিল এন্টিকুইটিস অব থিংস হিউম্যান অ্যান্ড ডিভাইন। এটি তিনি রচনা করেন ৪৭ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে। এই এনসাইক্লোপিডিয়া ছয়টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে রচিত হয়। এগুলো হলো: গীর্জা, পুরোহিত, উৎসব, ক্রীড়া, দেবদেবী এবং শাস্ত্রীয় ধর্ম

তাঁর অন্য এনসাইক্লোপিডিয়াটির নাম ছিল ডিসিপ্লানিরিয়ান। এটির বিষয় ছিল: ব্যাকরণ, দ্বান্দ্বিকতা, ভাষা, জ্যামিতি, গণিত, জীববিজ্ঞান, সংগীত, চিকিৎসা ও স্থাপত্যবিদ্যা।

বুক অব রেকর্ডস

৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের শেষের দিকে গ্রিক ক্রীড়াবিদ হিপ্পাস অলিম্পিক গেমসে বিজয়ীদের নিয়ে একটি সংকলন প্রকাশ করেন। এতে অলিম্পিকের সূচনালগ্ন থেকে হিপ্পাসের সময়কাল পর্যন্ত রেকর্ডধারী ক্রীড়ামোদীরা ঠাঁই পেয়েছেন। তবে এ সংকলনটি আর খুঁজে পাওয়া যায় না। বইটিতে ওসব খেলার মৌলিক দিকগুলো ছাড়া আরও কিছু নথিভুক্ত হয়েছিল কি না -জানা যায়নি।

কৌতুক-বিষয়ক বই

ছাপার অক্ষরে প্রথম কৌতুক মুদ্রিত হয় চীন দেশে। খ্রিষ্টপূর্ব ২০০ শতাব্দীতে ফরেস্ট অব জোকস নামের কৌতুক নিয়ে প্রথম বইটি বের হয়। এর রচয়িতা ছিলেন হার্ন দার্ন জান।

যৌনতা-বিষয়ক বই

একজন চীনা গ্রন্থাকার খ্রিষ্টপূর্ব ১০০ শতকে এ বিষয়ে রচিত ছয়টি বইয়ের একটি তালিকা করেন। এর মধ্যে একটির নামওয়ে অব ইয়িন। এসব গ্রন্থের রচয়িতা হিসেবে রাঙ চেঙ্গ ও উ চেঙ্গ-এর নাম পাওয়া যায়। তবে চায়নিজ এ বইগুলো সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায়নি। এগুলো আর পাওয়াও যায়নি

তবে সময়ের গ্রাস থেকে রক্ষা পাওয়া যৌনতা-বিষয়ক প্রাচীনতম গ্রন্থটি হচ্ছে ভারতীয় কামশাস্ত্র। এটি রচনা করেন বৎসায়ন। এর রচনাকাল সম্ভবত ১০০ খ্রিষ্টাব্দ। বইটিকে আগে প্রকাশিত এ সম্পর্কিত বইয়ের সারসংক্ষেপ বলা যেতে পারে।

সূত্র: দ্য পেঙ্গুইন বুক অব ফার্স্টস

দেবতাবৃক্ষ


ধূলিকণার মতো এক কণা বীজ থেকে কী করে কয়েক বিঘা জমি ছেয়ে ফেলা বটগাছের জন্ম হয়, প্রাচীনকালের মানুষের কাছে তা ছিল রীতিমতো এক বিরাট রহস্য ও বিস্ময়কর। তাই পৃথিবীর অনেক দেশেই বট তথা বনস্পতি ছিল সৃষ্টিকর্তার একখণ্ড বিশ্বরূপ। এ দেশে এখনো পল্লি অঞ্চলে হিন্দু ও বৌদ্ধ সমপ্রদায়ের কাছে বট, পাকুড়, অশ্বত্থ অত্যন্ত পবিত্র গাছ। অশ্বত্থগাছের নিচে বসে গৌতম বুদ্ধ ধ্যান করে নির্বাণ লাভ করেছিলেন। তাই বৌদ্ধ সমপ্রদায় সে গাছটির নাম দিয়েছে বোধিবৃক্ষ। বোধিবৃক্ষই রূপক অর্থে ভগবান বুদ্ধের প্রতিকৃতি। শ্রীলঙ্কার অনুরাধাপুরের শ্রী মহা বোধিবৃক্ষ এক বিশ্বখ্যাত দেব অশ্বত্থগাছ।



এ দেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামে এখনো একটা করে বট বা অশ্বত্থগাছ আছে, যার নিচে পূজা করা হয়। সেসব স্থানকে স্থানীয় ভাষায় ‘থান’ বা ‘ঠাকুরতলা’ বলে। সেটাকে লোকেরা গাছতলাও বলে। বট বা অশ্বত্থগাছই যেন ওদের কাছে গ্রামদেবতা, যে গ্রামের মানুষের সব বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করে। ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর এলাকায় এখনো অনেক গ্রামে বট ও অশ্বত্থগাছের বিয়ে দেওয়া হয়। সে বিয়ে উপলক্ষে কোথাও কোথাও বিয়ের অনুষ্ঠানের মতোই সব আয়োজন ও খাওয়াদাওয়া হয়। বিয়ের পর চারা দুটোকে একসঙ্গে বেঁধে কোনো মাঠের মধ্যে বা ফাঁকা জায়গায় লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেখানেই গড়ে ওঠে দেবতার থান। এ নিয়ে স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে অনেক পৌরাণিক কাহিনিও চালু আছে।



কোনো আদিবাসীদের মধ্যেও গাছ উপাসনার চল রয়েছে। সাঁওতালদের কারাম পূজায় শালগাছের ব্যবহার এর অন্যতম উদাহরণ। বিভিন্ন গ্রামে আগে গ্রামদেবতার পূজা হতো। গ্রামকে তারা কোনো না কোনো দেবতার অধীন বলে মনে করে। সেই দেবতার আসলে নির্দিষ্ট কোনো নাম থাকে না। সব বর্ণের লোকেরাই বিপদে সেই গ্রামদেবতার সাহায্য প্রার্থনা করে। সেই দেবতার উদ্দেশে বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে পান, তামা, চাল, কলা, পানি ইত্যাদি দিয়ে নৈবেদ্য দেওয়া হয়। গ্রামদেবতার কোনো মূর্তি নেই, কোনো মন্দিরও নেই। গ্রামের মধ্যে কোনো এক গাছতলায় মাটির ঢিবি বা শানের বেদি তৈরি করে সেখানে নিম্নবর্ণের কোনো যাজক দিয়ে পূজা করানো হয়। সাধারণ মানুষ কখনো সে পূজা ছাড়তে পারেনি। কোন অঞ্চলের কোন গাছকে গ্রামদেবতার আশ্রয় বা থান হিসেবে বেছে নেওয়া হবে, তা অনেকটাই নির্ভর করে সে এলাকার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কোনো গাছকে। এখনো হাওরাঞ্চলে বিশেষ করে, সুনামগঞ্জে করচগাছের ঝোপে এ ধরনের থান ও পূজার প্রচলন দেখা যায়। করচগাছ হাওরের জলে মাসের পর মাস ডুবে থেকেও বেঁচে থাকে। এ গাছ জলে একদিকে যেমন মাছকে আশ্রয় দেয়, তেমনি মাটির ক্ষয় রোধ করে, ঢেউয়ের বেগ কমায়। জল নেমে গেলে গাছ আবার পাতা ছেড়ে সতেজ হয়ে ওঠে। হাওরাঞ্চলে ওই করচগাছই যেন হাওরের গ্রামবাসীর রক্ষক, গ্রামের দেবতা। তাই নানা স্থানে গেলে করচগাছের ভেতর পূজার বেদি দেখা যায়।



এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে খুলনা জেলায় শেওড়াগাছে শরৎকালে ফুলের মালা পরানোর একটা গ্রাম্য রীতি আছে। এমনকি সে অঞ্চলে দুর্গাপূজার তালনবমী তিথিতে বারুইরা পানের বরজকে অপদেবতার কুদৃষ্টি থেকে রক্ষা করার জন্য পানের বরজে একটা কলার খোলে করে আতপ চাল, পাকা কলা ও ফুল দিয়ে সকালে নৈবেদ্য দেয়। এটাও এক রকমের গাছপূজা।



শুধু এ উপমহাদেশেই নয়, কোনো কোনো গাছ অন্য দেশেও দেবতা বা ঈশ্বরের মর্যাদা পেয়ে থাকে। বলা যায়, সেসব দেশে ওগুলো যেন দেবতাবৃক্ষ। লেবাননে সিডারগাছগুলো তেমনই এক দেববৃক্ষ। সেখানে চিরসবুজ সিডারগাছকে মনে করা হয় ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তার গাছ। লেবাননের পাহাড়ে জন্মানো এসব গাছকে প্রাচীনকাল থেকেই দেববৃক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে আসছে। বাইবেলে অন্তত ৭০ জায়গায় লেবাননের এই সিডারগাছের উল্লেখ রয়েছে। সে জন্যই হয়তো লেবাননের কিছু সিডারগাছ হয়ে উঠেছে ঈশ্বর যিশুর প্রতিকৃতি। প্রাচীনকালে জেরুজালেমে প্রথম মন্দিরটাই তৈরি করা হয়েছিল এ গাছের কাঠ দিয়ে। একসময় লেবাননে এ গাছ ছিল প্রচুর, এখন অনেক কমে গেছে। বর্তমানে মাউন্ট ম্যাকমেলের উপত্যকায় কিছু গাছ টিকে আছে। ব্রিটেনের রানি ভিক্টোরিয়া ১৮৭৬ সালে ১০২ হেক্টর জমিতে সিডারগাছ লাগিয়ে সেগুলো দেয়াল দিয়ে ঘিরে দিয়েছিলেন। সেটি ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পায়।
 
মৃত্যুঞ্জয় রায়

তারিখ: ৩০-০৭-২০১০