Thursday, 30 September 2010

যা কিছু প্রথম

সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে শক্তিশালী, সবচেয়ে দ্রুতগামী—এ রকম যাবতীয় রেকর্ডধারীরই একটা সাধারণ পরিণতি হচ্ছে একসময় পেছনে পড়ে যাওয়া। কারণ, আজ হোক, কাল হোক, কেউ না কেউ এই রেকর্ডধারীদের পেছনে ফেলবেই। কিন্তু যা কিছু প্রথম, তা সব সময়ই প্রথম। হতে পারে, প্রথম আবিষ্কৃত তথ্যটা হয়তো পরে দেখা গেল প্রথম নয়, তারও আগে কিছু আছে। কিন্তু সেটিও হবে প্রথম, কাজেই প্রথম চিরকালই প্রথম।

চলচ্চিত্রের সংগীত
ইংরেজি ধারাবাহিক দ্য স্যালভেশন আর্মিতে প্রথমবারের মতো সুর সংযোজন করা হয়। যিশু খ্রিষ্টের জীবন ও প্রাচীন যোদ্ধাদের বীরত্বগাথা নিয়ে ধারাবাহিকটি তৈরি হয়েছিল। এতে মূলত সুরারোপ করেছিলেন আর এম এম সি ন্যালি। ১৯০০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথমবারের মতো ধারাবাহিকটি প্রদর্শিত হয় মেলবোর্ন টাউন হলে।

স্টেরিও সাউন্ড সিস্টেম
ফরাসি টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ক্লেমেন্টকে স্টেরিও শব্দব্যবস্থার প্রথম প্রবক্তা বলা যায়। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করতে করতে তিনি গানের অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারের কাজে ব্যবহূত ‘থিয়াট্রিফোন’ তৈরি করে ফেলেন। তাঁর এই শব্দব্যবস্থায় মঞ্চের ডানে ও বাঁয়ে দুটি মাইক্রোফোন বসানো হতো। এসব মাইক্রোফোনের সঙ্গে টেলিফোনের তার জোড়া দেওয়া হতো। তারের অন্য প্রান্তে হেডফোন লাগিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থেকেও দূর থেকে শ্রোতারা রেকর্ড বাজানোর যন্ত্রে মঞ্চের অনুষ্ঠান সরাসরি শুনতে পারত।

শব্দ ধারণ
টমাস আলভা এডিসনের আবিষ্কৃত ফোনোগ্রাফই ছিল শব্দ ধারণ করার প্রাথমিক যন্ত্র। এডিসন (১৮৪৭-১৯৩১) যুক্তরাষ্ট্রের মেনলো পার্কের গবেষণাগারে বসে ফোনোগ্রাফ তৈরি করেন (১৮৭৬)। পরের বছর জন ক্রিউসি নামের এডিসনের এক সহযোগী ফোনোগ্রাফকে শব্দ ধারণ করার উপযোগী করে তোলেন।

দীর্ঘ সময় চলা রেকর্ড
১৯৪৪ সালের কোনো এক সন্ধ্যায় হাঙ্গেরির ড. পিটার গোল্ডমার্কের বাড়িতে এক অনুষ্ঠান চলছিল। গানও বাজছিল। কিন্তু সে সময়কার রেকর্ডগুলো ছিল সবই চার মিনিটের। ফলে একটু পরপরই গান বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। এতে বিগড়ে যায় পিটারের মেজাজ। এর পরই তিনি নেমে পড়েন কীভাবে রেকর্ডগুলো আরও দীর্ঘ সময় ধরে বাজানোর উপযোগী করা যায়, সেই সাধনায়। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করে কলম্বিয়ার ব্রডকাস্টিং সিস্টেম (সিবিএস)। চার বছর চেষ্টার পর ড. পিটার এলপি রেকর্ড বা লং প্লেয়িং রেকর্ড প্রস্তুত করতে সক্ষম হন। প্রথম এলপি রেকর্ডের দুই পিঠই ২৩ মিনিট করে চলার উপযোগী ছিল। নিউইয়র্কের বাজারে প্রথম এলপি রেকর্ড ছাড়া হয় ১৯৪৮ সালে।

কমপ্যাক্ট ডিস্ক
প্রথম কমপ্যাক্ট ডিস্ক ছিল জাপানি সনি ও ডাচ ফিলিপস কোম্পানির একটি যৌথ প্রকল্পের ফসল। ১৯৭৮ সালে প্রথমবারের মতো এ প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়। কিন্তু বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ১৯৮২ সালে জাপানে প্রথম কমপ্যাক্ট ডিস্কে গানের রেকর্ড বাজারে ছাড়া হয়।

ভাষান্তর: ইসরাত জাহান
সূত্র: দ্য পেঙ্গুইন বুক অব ফার্স্ট

No comments:

Post a Comment