Thursday, 30 September 2010
বিখ্যাত ব্যক্তিদের রসাল ঘটনা
লেখক প্রেমেন্দ্র মিত্র তখন চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করছেন। তাঁর নতুন একটা ছবি মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু ওই ছবির কাহিনী নিয়ে কথা উঠেছে। বুদ্ধদেব গুহ পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছেন যে কাহিনীটি তাঁর, প্রেমেন্দ্র মিত্র যা নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন। সবাই উদগ্রীব, প্রেমেন্দ্র মিত্র এখন কী বলেন! কিন্তু প্রেমেন্দ্র মিত্র কিছু বলছেন না। কদিন পর প্রেমেন্দ্র মিত্র বিবৃতি দিলেন। তিনি বললেন, ‘চলচ্চিত্রের কাহিনীটি আমার না সেটা সত্যি, তবে বুদ্ধদেব গুহ যেখান থেকে গল্পটি নিয়েছে, আমিও ওই একই জায়গা থেকে নিয়েছি।’
আদার হাজারো গুণ
‘আদাজল খেয়ে লাগা’ বলে একটা প্রবাদ আছে বাংলা ভাষায়। আদার সমৃদ্ধ খাদ্যমানের কারণেই বিজ্ঞজনেরা এই প্রবাদ প্রচলন করেছিলেন, সন্দেহ নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের খাদ্যতালিকায় আদা একটি অত্যাবশ্যকীয় নাম। রসুইঘর থেকে শুরু করে খেলার মাঠ—সবখানেই বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের শরীরের একাধিক চাহিদা পূরণ করে আসছে এই খাদ্য উপকরণটি। একটু ঠান্ডা লেগে গেলে কিংবা খেলার মাঝে হাঁপিয়ে উঠলে আদা চাই। আদা চাই গরম এক কাপ চায়ের মধ্যে অথবা যেকোনো রান্নায়। মাটির নিচে জন্ম নেওয়া এই মসলাজাতীয় খাবারটিতে আছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম। আছে যথেষ্ট পরিমাণ আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ফরফরাসের মতো খনিজ পদার্থ। এ ছাড়া সামান্য পরিমাণে হলেও আছে সোডিয়াম, জিংক ও ম্যাঙ্গানিজ।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আদা থাকলে যেকোনো ধরনের ঠান্ডাসংক্রান্ত রোগবালাই ও হাঁপানির আশঙ্কা থাকে না বললেই চলে। এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাকস্থলীর অনেক সমস্যা থেকেও রেহাই মেলে আদা সেবনে। এ ছাড়া সকালে উঠলে অনেকেরই শরীর ম্যাজম্যাজ করে, কিংবা দুর্বল বোধ করেন। এ ক্ষেত্রেও আদা বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আর্থ্রাইটিসের মতো রোগের ক্ষেত্রেও ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে আদা। এ ছাড়া চুল পড়া রোধেও তা বেশ কাজে দেয়। ভিটামিন ‘ই’, ‘এ’, ‘বি৬’ এবং ‘সি’র পরিমাণও কম নয় আদার মধ্যে। এ ছাড়া রক্তের প্লাটিলেট ও কার্ডিওভাসকুলার কার্যক্রম ঠিক রাখতেও তা দারুণ কার্যকর।
মাহফুজ রহমান
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আদা থাকলে যেকোনো ধরনের ঠান্ডাসংক্রান্ত রোগবালাই ও হাঁপানির আশঙ্কা থাকে না বললেই চলে। এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাকস্থলীর অনেক সমস্যা থেকেও রেহাই মেলে আদা সেবনে। এ ছাড়া সকালে উঠলে অনেকেরই শরীর ম্যাজম্যাজ করে, কিংবা দুর্বল বোধ করেন। এ ক্ষেত্রেও আদা বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আর্থ্রাইটিসের মতো রোগের ক্ষেত্রেও ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে আদা। এ ছাড়া চুল পড়া রোধেও তা বেশ কাজে দেয়। ভিটামিন ‘ই’, ‘এ’, ‘বি৬’ এবং ‘সি’র পরিমাণও কম নয় আদার মধ্যে। এ ছাড়া রক্তের প্লাটিলেট ও কার্ডিওভাসকুলার কার্যক্রম ঠিক রাখতেও তা দারুণ কার্যকর।
মাহফুজ রহমান
আকাশে ২৬ ঘণ্টা উড়ল সৌরশক্তি-চালিত বিমান
সেদিন আর দূরে নেই, যেদিন রাস্তায় গাড়ি চালাতে, আকাশে বিমান ওড়াতে কোনো জ্বালানি তেল লাগবে না। জ্বালানি তেল ছাড়াই দিব্যি দেখা যাবে, পাখা মেলে আকাশে উড়ছে উড়োজাহাজ, রাস্তায় চলছে মোটরগাড়ি। ইতিমধ্যেই সেই স্বপ্নের প্রাথমিক মহড়া সেরে ফেলেছে সুইজারল্যান্ডের একটি বিমান সংস্থা।
কিছুদিন আগে জ্বালানি ছাড়াই ২৬ ঘণ্টা আকাশে উড়েছে সুইজারল্যান্ডের একটি সৌরবিমান। এটি ২৬ ঘণ্টা সফলভাবে আকাশে ওড়ার পর মাটিতে অবতরণ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, ওই বিমানটির ২৬ ঘণ্টার যাত্রায় একফোঁটা জ্বালানি তেলও ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়নি। বিমানটিতে মাত্র একজনের বসার জায়গা ছিল।
তবে এর উদ্ভাবকেরা বলছেন, এখানে পূর্ণ ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি এবং বিমান তৈরির জন্য খুবই হালকা পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিমানের পরিবহনব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। যে বিমানটির কথা এতক্ষণ বলছিলাম, তার নাম সোলার এমপাল। কীভাবে কাজ করে এটি?
বিমানটির ওজন সাধারণ একটি মোটরগাড়ির সমান। ডানাজোড়া অবশ্য জাম্বো জেটের সমান—আকারে ৬০ মিটার, যেগুলো সৌর প্যানেল দ্বারা আবৃত। একটি-দুটি নয়, ১২ হাজার সৌরকোষ দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছে একে, যেগুলো সূর্যের আলো থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি সঞ্চয় করে এবং বিমানটি আকাশে ভেসে থাকার প্রয়োজনীয় শক্তি জোগায়। একটি স্কুটারের সমান শক্তি নিয়ে চলছে বিমানটি। বিবিসির পরিবেশবিষয়ক সাংবাদিক রজার হারমিন বলেন, বিমানটি সফলভাবে উড়ে নেমে আসতে পেরেছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এটি উড়তে শুরু করার আগে ব্যাটারিতে যে পরিমাণ শক্তি ছিল, এরচেয়ে বেশি শক্তি সঞ্চয় করে ফেরত এসেছে। আর সে কারণে এর উদ্ভাবকেরা বলছেন, আক্ষরিক অর্থে এটি পৃথিবীর মধ্যে প্রথম, যেখানে একটি সৌরবিমান সবচেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করেছে। সৌরবিমান হিসেবে এটি সবচেয়ে বেশি উঁচুতে উঠেছে এবং বেশি সময় ধরে উড়েছে—প্রায় ২৬ ঘণ্টা।
বিমানটি সূর্যের আলোর শক্তিতে চলে। রাতের বেলায় বা মেঘলা দিনে এটি কীভাবে চলে? যে বিমানের কথা লেখা হচ্ছে, সেটি একটি সপ্তাহের বুধবার থেকে উড়তে শুরু করে সূর্যের সঙ্গে সঙ্গে উড়েছে। এর আগে গত এপ্রিল মাসে বিমানটি সারা দিন উড়ে রেকর্ড করে। তবে এবার বিমানটির সামনে যে চ্যালেঞ্জ ছিল, তা হলো উড়তে উড়তে রাতের জ্বালানি সংগ্রহ করা এবং অন্তত ২৪ ঘণ্টার জ্বালানি সংগ্রহে রাখা। নামার পরে এটিকে আবার উড়তে হবে, এই পরিমাণ জ্বালানি মজুদ রাখতে হবে। এটি তা করতে পেরেছে। বলা যায়, একটু বেশিই পেরেছে। অন্যদিকে বিমানের চালককে কিন্তু জেগে থাকতে হয়েছে পুরো ২৬ ঘণ্টা।
বৈমানিকের জন্য এটি ছিল ঝামেলার ব্যাপার। কারণ তাঁকে ২৬ ঘণ্টার বেশি জেগে থাকতে হয়েছে। যদি তিনি সেটা না করতে পারতেন, তাহলে তাঁর মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল। কন্ট্রোল রুম থেকে বিভিন্নভাবে বৈমানিকের ওপর নজর রাখতে হয়েছে। টেলিমিটারি ও ইনফ্রারেড ক্যামেরা দিয়ে যেমন তাঁর ওপর নজর রাখা হচ্ছিল, তেমনি প্রতি মুহূর্তে দেখা হয়েছে, তিনি কী পরিমাণ অক্সিজেন গ্রহণ করেছেন। পুরো ব্যাপারটি ছিল এমন, যা পুরোপুরি মহাকাশ অভিযাত্রার মতো এবং এটি খুবই বিস্তারিত ও গুরুত্বপূর্ণভাবে করা হয়েছে। এদিকে বিমানটি যখন নামার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে, রানওয়ের চারপাশে উশখুশ করা মানুষেরা উল্লাস করেছে এবং করতালি দিয়ে স্বাগত জানিয়েছে।
তাহলে কি বিমানযাত্রার নতুন ইতিহাস লেখার সময় হলো? সেটি বলা যায় বটে! তাই বলে খুব তাড়াতাড়ি আপনি ওই বিমানে একটি টিকিট কেটে চড়ে বসতে পারছেন এমন নয়। এই বিমান যাঁরা তৈরি করেছেন, তাঁরা এটি প্রমাণ করেছেন যে একাগ্রতা, নিষ্ঠা ও স্বপ্ন থাকলে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়।
এই প্রকল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা ব্যাটকান পিটার বলেন, ‘এই পৃথিবীকে আরও সুন্দর করতে আমরা বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার করতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘এই সফলতা আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে হবে। আমরা যদি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে চাই, আমরা যদি একটি স্থিতিশীল অর্থনীতি তৈরি করতে চাই, আমরা যদি একটি স্থিতিশীল বিশ্ব তৈরি করতে চাই এবং আমরা যদি ভবিষ্যতের পৃথিবীর মানুষকে কাজ দিতে চাই, তাহলে উচিত হবে এই পরিবেশবান্ধব বিষয়গুলো কাজে লাগানো। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আমাদের যে নির্ভরশীলতা আছে তা কমিয়ে আনতে এসব প্রদ্ধতি সাহায্য করবে। আর এ জন্যই আমাদের এতকিছু করা।’
সামনের দিনগুলো
এই বিমানের সঙ্গে যাঁরা কাজ করছেন তাঁরা বলছেন, এরপর তাঁরা আটলান্টিকের ওপর দিয়ে চালাতে চান এই বিমান। আর আগামী তিন বছর পর যখন সৌরশক্তি আরও নিখুঁতভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ পাওয়া যাবে, তখন তাঁরা এমন একটি বিমানে চড়ে সারা পৃথিবী ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন।
কিছুদিন আগে জ্বালানি ছাড়াই ২৬ ঘণ্টা আকাশে উড়েছে সুইজারল্যান্ডের একটি সৌরবিমান। এটি ২৬ ঘণ্টা সফলভাবে আকাশে ওড়ার পর মাটিতে অবতরণ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, ওই বিমানটির ২৬ ঘণ্টার যাত্রায় একফোঁটা জ্বালানি তেলও ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়নি। বিমানটিতে মাত্র একজনের বসার জায়গা ছিল।
তবে এর উদ্ভাবকেরা বলছেন, এখানে পূর্ণ ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি এবং বিমান তৈরির জন্য খুবই হালকা পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিমানের পরিবহনব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। যে বিমানটির কথা এতক্ষণ বলছিলাম, তার নাম সোলার এমপাল। কীভাবে কাজ করে এটি?
বিমানটির ওজন সাধারণ একটি মোটরগাড়ির সমান। ডানাজোড়া অবশ্য জাম্বো জেটের সমান—আকারে ৬০ মিটার, যেগুলো সৌর প্যানেল দ্বারা আবৃত। একটি-দুটি নয়, ১২ হাজার সৌরকোষ দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছে একে, যেগুলো সূর্যের আলো থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি সঞ্চয় করে এবং বিমানটি আকাশে ভেসে থাকার প্রয়োজনীয় শক্তি জোগায়। একটি স্কুটারের সমান শক্তি নিয়ে চলছে বিমানটি। বিবিসির পরিবেশবিষয়ক সাংবাদিক রজার হারমিন বলেন, বিমানটি সফলভাবে উড়ে নেমে আসতে পেরেছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এটি উড়তে শুরু করার আগে ব্যাটারিতে যে পরিমাণ শক্তি ছিল, এরচেয়ে বেশি শক্তি সঞ্চয় করে ফেরত এসেছে। আর সে কারণে এর উদ্ভাবকেরা বলছেন, আক্ষরিক অর্থে এটি পৃথিবীর মধ্যে প্রথম, যেখানে একটি সৌরবিমান সবচেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করেছে। সৌরবিমান হিসেবে এটি সবচেয়ে বেশি উঁচুতে উঠেছে এবং বেশি সময় ধরে উড়েছে—প্রায় ২৬ ঘণ্টা।
বিমানটি সূর্যের আলোর শক্তিতে চলে। রাতের বেলায় বা মেঘলা দিনে এটি কীভাবে চলে? যে বিমানের কথা লেখা হচ্ছে, সেটি একটি সপ্তাহের বুধবার থেকে উড়তে শুরু করে সূর্যের সঙ্গে সঙ্গে উড়েছে। এর আগে গত এপ্রিল মাসে বিমানটি সারা দিন উড়ে রেকর্ড করে। তবে এবার বিমানটির সামনে যে চ্যালেঞ্জ ছিল, তা হলো উড়তে উড়তে রাতের জ্বালানি সংগ্রহ করা এবং অন্তত ২৪ ঘণ্টার জ্বালানি সংগ্রহে রাখা। নামার পরে এটিকে আবার উড়তে হবে, এই পরিমাণ জ্বালানি মজুদ রাখতে হবে। এটি তা করতে পেরেছে। বলা যায়, একটু বেশিই পেরেছে। অন্যদিকে বিমানের চালককে কিন্তু জেগে থাকতে হয়েছে পুরো ২৬ ঘণ্টা।
বৈমানিকের জন্য এটি ছিল ঝামেলার ব্যাপার। কারণ তাঁকে ২৬ ঘণ্টার বেশি জেগে থাকতে হয়েছে। যদি তিনি সেটা না করতে পারতেন, তাহলে তাঁর মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল। কন্ট্রোল রুম থেকে বিভিন্নভাবে বৈমানিকের ওপর নজর রাখতে হয়েছে। টেলিমিটারি ও ইনফ্রারেড ক্যামেরা দিয়ে যেমন তাঁর ওপর নজর রাখা হচ্ছিল, তেমনি প্রতি মুহূর্তে দেখা হয়েছে, তিনি কী পরিমাণ অক্সিজেন গ্রহণ করেছেন। পুরো ব্যাপারটি ছিল এমন, যা পুরোপুরি মহাকাশ অভিযাত্রার মতো এবং এটি খুবই বিস্তারিত ও গুরুত্বপূর্ণভাবে করা হয়েছে। এদিকে বিমানটি যখন নামার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে, রানওয়ের চারপাশে উশখুশ করা মানুষেরা উল্লাস করেছে এবং করতালি দিয়ে স্বাগত জানিয়েছে।
তাহলে কি বিমানযাত্রার নতুন ইতিহাস লেখার সময় হলো? সেটি বলা যায় বটে! তাই বলে খুব তাড়াতাড়ি আপনি ওই বিমানে একটি টিকিট কেটে চড়ে বসতে পারছেন এমন নয়। এই বিমান যাঁরা তৈরি করেছেন, তাঁরা এটি প্রমাণ করেছেন যে একাগ্রতা, নিষ্ঠা ও স্বপ্ন থাকলে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়।
এই প্রকল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা ব্যাটকান পিটার বলেন, ‘এই পৃথিবীকে আরও সুন্দর করতে আমরা বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার করতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘এই সফলতা আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে হবে। আমরা যদি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে চাই, আমরা যদি একটি স্থিতিশীল অর্থনীতি তৈরি করতে চাই, আমরা যদি একটি স্থিতিশীল বিশ্ব তৈরি করতে চাই এবং আমরা যদি ভবিষ্যতের পৃথিবীর মানুষকে কাজ দিতে চাই, তাহলে উচিত হবে এই পরিবেশবান্ধব বিষয়গুলো কাজে লাগানো। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আমাদের যে নির্ভরশীলতা আছে তা কমিয়ে আনতে এসব প্রদ্ধতি সাহায্য করবে। আর এ জন্যই আমাদের এতকিছু করা।’
সামনের দিনগুলো
এই বিমানের সঙ্গে যাঁরা কাজ করছেন তাঁরা বলছেন, এরপর তাঁরা আটলান্টিকের ওপর দিয়ে চালাতে চান এই বিমান। আর আগামী তিন বছর পর যখন সৌরশক্তি আরও নিখুঁতভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ পাওয়া যাবে, তখন তাঁরা এমন একটি বিমানে চড়ে সারা পৃথিবী ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন।
বিবিসি বাংলা
অহেতুক কৌতুক
চিকিৎসক তাঁর রোগীকে হার্টের পরীক্ষা করাতে দিয়েছেন প্রায় গোটা পাঁচেক। রোগী সব পরীক্ষা সেরে রিপোর্ট নিয়ে এল চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে। চিকিৎসক রিপোর্ট দেখে বললেন, ‘নিশ্চিন্ত থাকুন, আপনি যত দিন বাঁচবেন, আপনার হার্ট তত দিন ঠিকঠাক কাজ করে যাবে।’
প্রথম বন্ধু: তোর বউ শেষ পর্যন্ত ড্রাইভারের সঙ্গে চলে গেল? ভাবতেই খারাপ লাগছে!
দ্বিতীয় বন্ধু: আরে তাতে কী? বিপদের কথা ভেবে আমি আগেভাগেই ড্রাইভারের কাছ থেকে গাড়ি চালানোটা শিখে রেখেছি।
প্রথম বন্ধু: পা খোঁড়া কুকুরকে কী বলে ডাকা যায়?
দ্বিতীয় বন্ধু: যা খুশি ডাক, তাতে কিছু যায়-আসে না, ডাক শুনে ও তো আর চার পায়ে দৌড়ে চলে আসবে না।
# উকিল: গাড়িটা যখন অ্যাকসিডেন্ট করল, তখন আপনি কত দূরে ছিলেন?
সাক্ষী: ৩০ ফুট ১১ ইঞ্চি দূরে ছিলাম।
উকিল: এত নিখুঁত মাপ বলছেন কী করে?
সাক্ষী: জানতাম, কোনো একটা বেকুব আমাকে এই প্রশ্নটা করবেই।
# পুলিশ সার্জেন্ট: আপনাদের গাড়ির কোনো হেডলাইট নেই, দুই পাশের আয়না ভাঙা, হর্ন নেই, জানালার কাচ ভাঙা, ব্যাকলাইট নষ্ট, ব্রেক ধরে না, আপনারা কেউই সিটবেল্ট বাঁধেননি, তার পরও এত জোরে গাড়ি চালাচ্ছেন... বিষয়টা কী?
ড্রাইভার: স্যার, আমার কোনো দোষ নেই, সব দোষ এই ব্যাটার। ওরে আমি আগেই কইছিলাম, এই ভাঙাচোরা গাড়ি চুরি করার কোনো দরকার নেই।
# বাড়ির মালিক: তোমাকে যে নাইটগার্ডের চাকরি দেব, তোমার যোগ্যতাটা কী, শুনি?
নাইটগার্ড: আমি, স্যার, সামান্য গোলমালেই জেগে উঠি।
প্রথম বন্ধু: তোর বউ শেষ পর্যন্ত ড্রাইভারের সঙ্গে চলে গেল? ভাবতেই খারাপ লাগছে!
দ্বিতীয় বন্ধু: আরে তাতে কী? বিপদের কথা ভেবে আমি আগেভাগেই ড্রাইভারের কাছ থেকে গাড়ি চালানোটা শিখে রেখেছি।
প্রথম বন্ধু: পা খোঁড়া কুকুরকে কী বলে ডাকা যায়?
দ্বিতীয় বন্ধু: যা খুশি ডাক, তাতে কিছু যায়-আসে না, ডাক শুনে ও তো আর চার পায়ে দৌড়ে চলে আসবে না।
# উকিল: গাড়িটা যখন অ্যাকসিডেন্ট করল, তখন আপনি কত দূরে ছিলেন?
সাক্ষী: ৩০ ফুট ১১ ইঞ্চি দূরে ছিলাম।
উকিল: এত নিখুঁত মাপ বলছেন কী করে?
সাক্ষী: জানতাম, কোনো একটা বেকুব আমাকে এই প্রশ্নটা করবেই।
# পুলিশ সার্জেন্ট: আপনাদের গাড়ির কোনো হেডলাইট নেই, দুই পাশের আয়না ভাঙা, হর্ন নেই, জানালার কাচ ভাঙা, ব্যাকলাইট নষ্ট, ব্রেক ধরে না, আপনারা কেউই সিটবেল্ট বাঁধেননি, তার পরও এত জোরে গাড়ি চালাচ্ছেন... বিষয়টা কী?
ড্রাইভার: স্যার, আমার কোনো দোষ নেই, সব দোষ এই ব্যাটার। ওরে আমি আগেই কইছিলাম, এই ভাঙাচোরা গাড়ি চুরি করার কোনো দরকার নেই।
# বাড়ির মালিক: তোমাকে যে নাইটগার্ডের চাকরি দেব, তোমার যোগ্যতাটা কী, শুনি?
নাইটগার্ড: আমি, স্যার, সামান্য গোলমালেই জেগে উঠি।
লুই আই কানের কিছু বিখ্যাত কাজ
# ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় আর্ট গ্যালারি—নিউ হ্যাভেন, কানেকটিকাট (১৯৫১—৫৩)
# রিচার্ড মেডিকেল রিসার্চ ল্যাবরেটরি— পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ফিলাডেলফিয়া (১৯৫৭—৬৫)
# সল্ক ইনস্টিটিউট—লা জোলা, ক্যালিফোর্নিয়া (১৯৫৯—৬৫)
# প্রথম ইউনিটারিয়ান চার্চ—রোচেস্টার, নিউইয়র্ক (১৯৫৯—৬৯)
# ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট— আহমেদাবাদ, ইন্ডিয়া (১৯৬২)
# ফিলিপ্স একাডেমি লাইব্রেরি—এক্সিটর, নিউ হ্যাম্পশায়ার (১৯৬৫—৭২)
# কিম্বেল আর্ট জাদুঘর—ফোর্ট ওয়ার্থ, টেক্সাস (১৯৬৬—৭২)
# ইয়েল সেন্টার ফর ব্রিটিশ আর্ট—ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়, নিউ হ্যাভেন, কানেকটিকাট (১৯৬৯—৭৪)
স্থপতি লুই কান ও সংসদ ভবন
আমাদের জাতীয় সংসদ ভবন। স্থাপত্যের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘মাস্টার পিস’—বিশ্বের সেরা কয়েকটি স্থাপত্যের একটি। এটি আমদের গর্ব। আমাদের অহংকার ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে। আর এই বিশ্বসেরা স্থাপত্য যাঁর হাত ধরে সৃষ্টি, তিনি হলেন বিশ্বখ্যাত স্থপতি লুইস আই কান বা লুই আই কান। লুই কানের জন্ম ১৯০১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন রাশিয়ার এস্তোনিয়ায়।
১৯২৪ সালে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লুই কান স্নাতক ডিগ্রি নেন। তারপর ঘুরে বেড়ান পৃথিবীর নানা প্রান্তে। কাজ করেন জন মলিটর, জর্জ হুই, অস্কার স্টনোরোভর মতো তৎকালীন নামকরা স্থপতিদের সঙ্গে। প্রথম দিকে লুই কান আন্তর্জাতিক মানের কাজ করলেও তাঁর নিজস্ব কোনো স্টাইল ছিল না। বয়স ৫০ পেরোনোর পর তিনি শুরু করেন সম্পূর্ণ নিজের ধরনের কাজ। জন্ম দেন একের পর এক নামকরা স্থাপত্য, যার শেষের দিকের নিদর্শন আমাদের সংসদ ভবন। যে স্থাপত্য লুই কানকে স্থান দিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। বাংলাদেশের তো বটেই, বিশ্বেরও।
জাতীয় সংসদ ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৬১ সালে। এটিকে তখন পূর্ব পাকিস্তানের সংসদ ভবন হিসেবে ভাবা হয়েছিল। স্বাধীনতার পর তা পরিণত হয় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনে। ১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি শেষ হয় এর নির্মাণকাজ। একই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সংসদের অষ্টম ও শেষ অধিবেশনে হয় এর উদ্বোধন। লুই কান এই বিশ্বসেরা স্থাপত্যের স্থপতি হলেও সর্বপ্রথম এই জাতীয় সংসদ ভবনের নকশা তৈরির দায়িত্ব পেয়েছিলেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি স্থপতি মাজহারুল ইসলাম। বড় মাপের মানুষের মনও যে বড় হয়, স্থপতি মাজহারুল ইসলাম তা আবারও প্রমাণ করেছেন। তিনি ছিলেন লুই কানের প্রিয় ছাত্রদের একজন। তিনিই লুই কানকে এ দেশে এনেছিলেন এবং সংসদ ভবনের নকশা তৈরির দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন। তাঁর প্রিয় শিক্ষকই পারবেন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কিছু করতে—এই বিশ্বাস থেকেই জন্ম নিয়েছে জাতীয় সংসদ ভবনের মতো একটি বিশ্বসেরা স্থাপত্য।
সংসদ ভবনের পুরো কমপ্লেক্সের নকশাটিই লুই কানের করা। কমপ্লেক্সের ঠিক মাঝখানে স্থাপিত মূল ভবনটি। এ ছাড়া কমপ্লেক্সজুড়ে আছে লন, লেক ও এমপি হোস্টেল। কমপ্লেক্সটির চারপাশ দিয়ে গেছে চারটি প্রধান সড়ক। মূল ভবনটি তিনটি প্রধান ভাগে বিভক্ত—প্রধান প্লাজা, দক্ষিণ প্লাজা ও রাষ্ট্রীয় প্লাজা। লেকটি যাতে নদীমাতৃক বাংলাদেশের পরিচয় বহন করে, সেই দিকটি বিবেচনা করেছেন লুই কান। এটি লুই কানের এমনি এক সৃষ্টি, যা কোনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নয়। এটি আধুনিক ও কালোতীর্ণ। লুই কান তাঁর এই অমর সৃষ্টিতে প্রাকৃতিক আলোর ব্যবহার করেছেন বিস্ময়করভাবে। তিনি এই ভবনে বৃত্ত, অর্ধবৃত্ত, বর্গ, ত্রিভুজের কাঠামোগুলো দিয়ে একটি নতুন স্বাধীনতার আদর্শের আত্মপ্রকাশ ঘটাতে চেয়েছিলেন। তিনি পেরেছেনও। তাঁর হাত ধরেই জন্ম নিয়েছে একটি স্বাধীন দেশের নতুন দিনের আশার আলোকরেখা।
১৯৭৪ সালে পেনসিলভানিয়ার এক রেলস্টেশনে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান লুই কান। তিনি বেঁচে নেই ঠিকই, কিন্তু তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন চিরকাল। যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন থাকবে জাতীয় সংসদ ভবন। আর সংসদ ভবন ধারণ করে রাখবে তার স্থপতির নাম।
১৯২৪ সালে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লুই কান স্নাতক ডিগ্রি নেন। তারপর ঘুরে বেড়ান পৃথিবীর নানা প্রান্তে। কাজ করেন জন মলিটর, জর্জ হুই, অস্কার স্টনোরোভর মতো তৎকালীন নামকরা স্থপতিদের সঙ্গে। প্রথম দিকে লুই কান আন্তর্জাতিক মানের কাজ করলেও তাঁর নিজস্ব কোনো স্টাইল ছিল না। বয়স ৫০ পেরোনোর পর তিনি শুরু করেন সম্পূর্ণ নিজের ধরনের কাজ। জন্ম দেন একের পর এক নামকরা স্থাপত্য, যার শেষের দিকের নিদর্শন আমাদের সংসদ ভবন। যে স্থাপত্য লুই কানকে স্থান দিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। বাংলাদেশের তো বটেই, বিশ্বেরও।
জাতীয় সংসদ ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৬১ সালে। এটিকে তখন পূর্ব পাকিস্তানের সংসদ ভবন হিসেবে ভাবা হয়েছিল। স্বাধীনতার পর তা পরিণত হয় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনে। ১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি শেষ হয় এর নির্মাণকাজ। একই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সংসদের অষ্টম ও শেষ অধিবেশনে হয় এর উদ্বোধন। লুই কান এই বিশ্বসেরা স্থাপত্যের স্থপতি হলেও সর্বপ্রথম এই জাতীয় সংসদ ভবনের নকশা তৈরির দায়িত্ব পেয়েছিলেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি স্থপতি মাজহারুল ইসলাম। বড় মাপের মানুষের মনও যে বড় হয়, স্থপতি মাজহারুল ইসলাম তা আবারও প্রমাণ করেছেন। তিনি ছিলেন লুই কানের প্রিয় ছাত্রদের একজন। তিনিই লুই কানকে এ দেশে এনেছিলেন এবং সংসদ ভবনের নকশা তৈরির দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন। তাঁর প্রিয় শিক্ষকই পারবেন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কিছু করতে—এই বিশ্বাস থেকেই জন্ম নিয়েছে জাতীয় সংসদ ভবনের মতো একটি বিশ্বসেরা স্থাপত্য।
সংসদ ভবনের পুরো কমপ্লেক্সের নকশাটিই লুই কানের করা। কমপ্লেক্সের ঠিক মাঝখানে স্থাপিত মূল ভবনটি। এ ছাড়া কমপ্লেক্সজুড়ে আছে লন, লেক ও এমপি হোস্টেল। কমপ্লেক্সটির চারপাশ দিয়ে গেছে চারটি প্রধান সড়ক। মূল ভবনটি তিনটি প্রধান ভাগে বিভক্ত—প্রধান প্লাজা, দক্ষিণ প্লাজা ও রাষ্ট্রীয় প্লাজা। লেকটি যাতে নদীমাতৃক বাংলাদেশের পরিচয় বহন করে, সেই দিকটি বিবেচনা করেছেন লুই কান। এটি লুই কানের এমনি এক সৃষ্টি, যা কোনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নয়। এটি আধুনিক ও কালোতীর্ণ। লুই কান তাঁর এই অমর সৃষ্টিতে প্রাকৃতিক আলোর ব্যবহার করেছেন বিস্ময়করভাবে। তিনি এই ভবনে বৃত্ত, অর্ধবৃত্ত, বর্গ, ত্রিভুজের কাঠামোগুলো দিয়ে একটি নতুন স্বাধীনতার আদর্শের আত্মপ্রকাশ ঘটাতে চেয়েছিলেন। তিনি পেরেছেনও। তাঁর হাত ধরেই জন্ম নিয়েছে একটি স্বাধীন দেশের নতুন দিনের আশার আলোকরেখা।
১৯৭৪ সালে পেনসিলভানিয়ার এক রেলস্টেশনে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান লুই কান। তিনি বেঁচে নেই ঠিকই, কিন্তু তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন চিরকাল। যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন থাকবে জাতীয় সংসদ ভবন। আর সংসদ ভবন ধারণ করে রাখবে তার স্থপতির নাম।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
যশোর রোড: আন্দোলনের অনন্ত প্রেরণা
আমার ইচ্ছা ছিল, বব ডিলানকে চমকে দিয়ে একটা গান লিখব। অনেকটা উইলিয়াম কার্লোস উইলিয়ামসের ‘স্যাড-আইড লেডি অব দ্য লো ল্যান্ডস’-এর মতো লম্বা কোনো গান, যা প্রকৃতির সৌন্দর্য আর মানবিক আকুতি জাগাবে, যা ডিলানকে ভাবাবে, কাঁদাবে। আমি তা-ই লিখতে চেষ্টা কলাম। সম্প্রতি কলকাতা ঘুরে লাখ লাখ মানুষের সীমাহীন দুঃখ-কষ্ট দেখে আমার যে অনুভূতি তৈরি হয়েছে, তা-ই লিখলাম। কলকাতার ভাষা আর সংগীতের মিশ্রণে সেটাকে গানে রূপ দিলাম ভারতীয় হারমোনিয়াম সহযোগে। সে সময়ে দেখা মানুষগুলোর অন্তহীন যাতনা আমাকে নির্বাক করেছিল। সব বয়সের মানুষের বেঁচে থাকার কষ্ট আমার বুকে চেপে বসে ছিল। সেই যাতনা হূদয়ে নিয়েই আমি লিখেছিলাম ‘যশোর রোড’ কবিতা। আমি মূলত ভারতীয় বজ্র গুরু মন্ত্র নামের বৌদ্ধ সুরের সঙ্গে ‘ব্ল্যাক’-এর গাওয়া ‘ওয়ান অ্যানাদারস সরো’র অন্ত্যমিলের সমন্বয়ে যশোর গাওয়ার চেষ্টা করলাম। ডিলান আমার এই লেখা পড়ে দেখার জন্য নিলেন। পরদিন তিনি যখন সেটি ফেরত দিলেন তখন বললেন, ‘আমি না কেঁদে পারিনি।’ আমরা পরে এ গানের সুর ও সংগীত প্রযোজনার উদ্যোগ নিলাম। কিন্তু বব প্রথম দিকে কিছুতেই পাশ্চাত্যের হারমোনিয়ামের সঙ্গে গিটারের সমন্বয় করতে পারছিলেন না। আমি অবশ্য তাঁকে বলেছিলাম, এ গান বোধহয় ব্লুজের সুরে হবে, যদিও তাঁর কাছ থেকে ব্লুজ সম্পর্কে তখনো আমি শিখছিলাম। বব বারবার তাঁর গিটার টিউন করছিলেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। অনেকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলেন, আর এদিকে আমি একটানা গানটি গেয়েই যাচ্ছিলাম। বব একটানা গিটারে সুর তোলার চেষ্টা করেই গেলেন যতক্ষণ না তাঁর হাত ব্যথা হয়। পরে ডিলান অন্য একটি গিটার আনলেন, পিয়ানো বাদ দিলেন এবং গানের বিভিন্ন অন্তরায় ড্রাম বাজাতে শুরু করলেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ছিল দশ আঙুলে ডিলানের জাদুকরী গিটার বাজানো। সময় সময় তিনি থামছিলেন ঠিক যেখানে থামা উচিত; আবার শুরু করছিলেন। শেষমেশ গানটি দাঁড়াল। পরে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে ডেট্রয়েটে আমরা কবি ‘জন সিনক্লেয়ারের মুক্তি চাই’—এ দাবিতে আয়োজিত শোভাযাত্রায় যশোর রোড গানটি গাই। জন সিনক্লেয়ার ছিলেন মার্কিন কবি ও সাংবাদিক। বিকল্প রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন তিনি। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এ শোভাযাত্রার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন জন লেনন ও তাঁর স্ত্রী ইয়োকো ওনো। আমরা শোভাযাত্রায় পুরো গানটিই গাই এবং আমাদের সঙ্গে সেদিন গিটার বাজিয়েছিলেন গ্রে গেটজ। আমাদের গান গাওয়ার সময়ে লেনন ছিলেন ড্রেসিং রুমে। এ কারণে তিনি গানটি শুনতে পারেননি। পরে যখন আমরা তাঁর সঙ্গে হোটেলে দেখা করি, তখন গ্রেটজ ও আমি তাঁকে গানটি গেয়ে শোনাই। লেনন মুগ্ধ হয়েছিলেন।
আখতার জামান
সূত্র: ডিলান ১০, বসন্ত সংখ্যা (কবিতা ও গানের খবরাখবর নিয়ে বব ডিলানের প্রকাশনা)
যা কিছু প্রথম
সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে শক্তিশালী, সবচেয়ে দ্রুতগামী—এ রকম যাবতীয় রেকর্ডধারীরই একটা সাধারণ পরিণতি হচ্ছে একসময় পেছনে পড়ে যাওয়া। কারণ, আজ হোক, কাল হোক, কেউ না কেউ এই রেকর্ডধারীদের পেছনে ফেলবেই। কিন্তু যা কিছু প্রথম, তা সব সময়ই প্রথম। হতে পারে, প্রথম আবিষ্কৃত তথ্যটা হয়তো পরে দেখা গেল প্রথম নয়, তারও আগে কিছু আছে। কিন্তু সেটিও হবে প্রথম, কাজেই প্রথম চিরকালই প্রথম।
চলচ্চিত্রের সংগীত
ইংরেজি ধারাবাহিক দ্য স্যালভেশন আর্মিতে প্রথমবারের মতো সুর সংযোজন করা হয়। যিশু খ্রিষ্টের জীবন ও প্রাচীন যোদ্ধাদের বীরত্বগাথা নিয়ে ধারাবাহিকটি তৈরি হয়েছিল। এতে মূলত সুরারোপ করেছিলেন আর এম এম সি ন্যালি। ১৯০০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথমবারের মতো ধারাবাহিকটি প্রদর্শিত হয় মেলবোর্ন টাউন হলে।
স্টেরিও সাউন্ড সিস্টেম
ফরাসি টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ক্লেমেন্টকে স্টেরিও শব্দব্যবস্থার প্রথম প্রবক্তা বলা যায়। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করতে করতে তিনি গানের অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারের কাজে ব্যবহূত ‘থিয়াট্রিফোন’ তৈরি করে ফেলেন। তাঁর এই শব্দব্যবস্থায় মঞ্চের ডানে ও বাঁয়ে দুটি মাইক্রোফোন বসানো হতো। এসব মাইক্রোফোনের সঙ্গে টেলিফোনের তার জোড়া দেওয়া হতো। তারের অন্য প্রান্তে হেডফোন লাগিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থেকেও দূর থেকে শ্রোতারা রেকর্ড বাজানোর যন্ত্রে মঞ্চের অনুষ্ঠান সরাসরি শুনতে পারত।
শব্দ ধারণ
টমাস আলভা এডিসনের আবিষ্কৃত ফোনোগ্রাফই ছিল শব্দ ধারণ করার প্রাথমিক যন্ত্র। এডিসন (১৮৪৭-১৯৩১) যুক্তরাষ্ট্রের মেনলো পার্কের গবেষণাগারে বসে ফোনোগ্রাফ তৈরি করেন (১৮৭৬)। পরের বছর জন ক্রিউসি নামের এডিসনের এক সহযোগী ফোনোগ্রাফকে শব্দ ধারণ করার উপযোগী করে তোলেন।
দীর্ঘ সময় চলা রেকর্ড
১৯৪৪ সালের কোনো এক সন্ধ্যায় হাঙ্গেরির ড. পিটার গোল্ডমার্কের বাড়িতে এক অনুষ্ঠান চলছিল। গানও বাজছিল। কিন্তু সে সময়কার রেকর্ডগুলো ছিল সবই চার মিনিটের। ফলে একটু পরপরই গান বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। এতে বিগড়ে যায় পিটারের মেজাজ। এর পরই তিনি নেমে পড়েন কীভাবে রেকর্ডগুলো আরও দীর্ঘ সময় ধরে বাজানোর উপযোগী করা যায়, সেই সাধনায়। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করে কলম্বিয়ার ব্রডকাস্টিং সিস্টেম (সিবিএস)। চার বছর চেষ্টার পর ড. পিটার এলপি রেকর্ড বা লং প্লেয়িং রেকর্ড প্রস্তুত করতে সক্ষম হন। প্রথম এলপি রেকর্ডের দুই পিঠই ২৩ মিনিট করে চলার উপযোগী ছিল। নিউইয়র্কের বাজারে প্রথম এলপি রেকর্ড ছাড়া হয় ১৯৪৮ সালে।
কমপ্যাক্ট ডিস্ক
প্রথম কমপ্যাক্ট ডিস্ক ছিল জাপানি সনি ও ডাচ ফিলিপস কোম্পানির একটি যৌথ প্রকল্পের ফসল। ১৯৭৮ সালে প্রথমবারের মতো এ প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়। কিন্তু বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ১৯৮২ সালে জাপানে প্রথম কমপ্যাক্ট ডিস্কে গানের রেকর্ড বাজারে ছাড়া হয়।
চলচ্চিত্রের সংগীত
ইংরেজি ধারাবাহিক দ্য স্যালভেশন আর্মিতে প্রথমবারের মতো সুর সংযোজন করা হয়। যিশু খ্রিষ্টের জীবন ও প্রাচীন যোদ্ধাদের বীরত্বগাথা নিয়ে ধারাবাহিকটি তৈরি হয়েছিল। এতে মূলত সুরারোপ করেছিলেন আর এম এম সি ন্যালি। ১৯০০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথমবারের মতো ধারাবাহিকটি প্রদর্শিত হয় মেলবোর্ন টাউন হলে।
স্টেরিও সাউন্ড সিস্টেম
ফরাসি টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ক্লেমেন্টকে স্টেরিও শব্দব্যবস্থার প্রথম প্রবক্তা বলা যায়। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করতে করতে তিনি গানের অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারের কাজে ব্যবহূত ‘থিয়াট্রিফোন’ তৈরি করে ফেলেন। তাঁর এই শব্দব্যবস্থায় মঞ্চের ডানে ও বাঁয়ে দুটি মাইক্রোফোন বসানো হতো। এসব মাইক্রোফোনের সঙ্গে টেলিফোনের তার জোড়া দেওয়া হতো। তারের অন্য প্রান্তে হেডফোন লাগিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থেকেও দূর থেকে শ্রোতারা রেকর্ড বাজানোর যন্ত্রে মঞ্চের অনুষ্ঠান সরাসরি শুনতে পারত।
শব্দ ধারণ
টমাস আলভা এডিসনের আবিষ্কৃত ফোনোগ্রাফই ছিল শব্দ ধারণ করার প্রাথমিক যন্ত্র। এডিসন (১৮৪৭-১৯৩১) যুক্তরাষ্ট্রের মেনলো পার্কের গবেষণাগারে বসে ফোনোগ্রাফ তৈরি করেন (১৮৭৬)। পরের বছর জন ক্রিউসি নামের এডিসনের এক সহযোগী ফোনোগ্রাফকে শব্দ ধারণ করার উপযোগী করে তোলেন।
দীর্ঘ সময় চলা রেকর্ড
১৯৪৪ সালের কোনো এক সন্ধ্যায় হাঙ্গেরির ড. পিটার গোল্ডমার্কের বাড়িতে এক অনুষ্ঠান চলছিল। গানও বাজছিল। কিন্তু সে সময়কার রেকর্ডগুলো ছিল সবই চার মিনিটের। ফলে একটু পরপরই গান বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। এতে বিগড়ে যায় পিটারের মেজাজ। এর পরই তিনি নেমে পড়েন কীভাবে রেকর্ডগুলো আরও দীর্ঘ সময় ধরে বাজানোর উপযোগী করা যায়, সেই সাধনায়। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করে কলম্বিয়ার ব্রডকাস্টিং সিস্টেম (সিবিএস)। চার বছর চেষ্টার পর ড. পিটার এলপি রেকর্ড বা লং প্লেয়িং রেকর্ড প্রস্তুত করতে সক্ষম হন। প্রথম এলপি রেকর্ডের দুই পিঠই ২৩ মিনিট করে চলার উপযোগী ছিল। নিউইয়র্কের বাজারে প্রথম এলপি রেকর্ড ছাড়া হয় ১৯৪৮ সালে।
কমপ্যাক্ট ডিস্ক
প্রথম কমপ্যাক্ট ডিস্ক ছিল জাপানি সনি ও ডাচ ফিলিপস কোম্পানির একটি যৌথ প্রকল্পের ফসল। ১৯৭৮ সালে প্রথমবারের মতো এ প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়। কিন্তু বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ১৯৮২ সালে জাপানে প্রথম কমপ্যাক্ট ডিস্কে গানের রেকর্ড বাজারে ছাড়া হয়।
ভাষান্তর: ইসরাত জাহান
সূত্র: দ্য পেঙ্গুইন বুক অব ফার্স্ট
বার্ধক্যে খ্যাতি
# যশ-খ্যাতি যা কামানোর, অধিকাংশ লোক তা তরুণ বয়সেই কামান। ব্যতিক্রমও আছে। বেশি বয়সেও অনেকে সাফল্যের দেখা পান, পান খ্যাতির স্বাদ। ভেতরে শিল্পীসত্তা আর উদ্যমী একটা মন থাকলে সাফল্য ধরা দেবেই দেবে; বয়সে আপনি নবীন হোন আর প্রবীণই হোন। কাজটাই মুখ্য। সেই কাজের গুণে লোকে আপনাকে চিনবে, আপনার নামডাক হবে। তেমনই কজন প্রবীণ খ্যাতিমান মানুষের সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা হলো। তাঁরা বেশি বয়সেও এমন সব কাজ করে গেছেন, যে কাজের জন্য মৃত্যুর পরও তাঁরা অমর হয়ে আছেন, থাকবেন।
# গেঁটেবাতে আক্রান্ত আনা মোসেস একরকম পঙ্গু হয়ে ঘরে বসে ছিলেন। তখন তাঁর বয়স ৭৬ বছর। রং-তুলি ছুঁয়েও দেখেননি কখনো। নিঃসঙ্গ সময় কাটাতে সেই আনা হাতে তুলে নেন তুলি। ক্যানভাসে এঁকে চলেন একের পর এক ছবি। সেই ছবির খ্যাতি একটু একটু করে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। যুক্তরাষ্ট্র এমনকি অন্যান্য দেশেও তাঁর আঁকা ছবির কদর বাড়তে লাগল। দেখতে দেখতে রীতিমতো সেলিব্রিটি বনে গেলেন। এরপর জীবনের ২৫টি বছর ছবি এঁকেই কাটিয়েছেন তিনি। ১০১ বছর বয়সে মারা যান আনা মোসেস।
# ফাস্ট ফুড সংস্কৃতিতে যারা অভ্যস্ত, তাদের কাছে ম্যাকডোনাল্ডসের কদর আলাদা। ম্যাকডোনাল্ডস অভিজাত একটি ব্র্যান্ডের নাম, যার তৈরি হ্যামবার্গারের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। রে ক্রোক নামের এক ব্যক্তি সেই হ্যামবার্গার বানিয়েছিলেন ৫২ বছর বয়সে। স্বাদে ও গুণে অনন্য হ্যামবার্গারের খ্যাতি ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠা পায় ম্যাকডোনাল্ডস নামের একটি ব্র্যান্ড। ১৯৬৩ সালের মধ্যে ১০০ কোটিরও বেশি হ্যামবার্গার বিক্রি হয়ে যায়। অথচ এই রে ক্রোক তাঁর তারুণ্যের ১৭টি বসন্ত কাটিয়েছেন সেলসম্যানের কাজ করে। পরের ১৭ বছর তিনি দুধের সঙ্গে আইসক্রিম মিশিয়ে এক ধরনের পানীয় তৈরির কাজ করেছেন।
# ৬১ বছর বয়সে চিকিৎসা পেশা থেকে অবসর নেন রোজেট। এরপর মন দেন ভাষার কাজে। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে অভিধান তৈরির কাজটা তিনিই প্রথম করেন। ৭৩ বছর বয়সে অভিধানের কাজ শেষ করেন এবং রোজেট-অভিধান প্রকাশিত হয়। ৯০ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগপর্যন্ত ওই অভিধানে যত পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয়েছে, সবকিছুর সঙ্গে তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।
# রান্নাবাটি সম্পর্কে বেজায় ঔদাসীন্য ছিলেন জুলিয়া চাইল্ড। বয়স যখন ৩০, তখন তিনি ফ্রান্সে যান। সেখানে গিয়ে ফরাসি রান্নার এমনই ভক্ত বনে যান যে ফরাসি রন্ধনরীতি আয়ত্ত করা শুরু করেন তিনি। উদরপূর্তির জন্য উনুনে হাঁড়ি চড়িয়েই ক্ষান্ত হননি জুলিয়া। রান্নার বিন্দু-বিসর্গ পর্যন্ত জানলেন। একসময় ফরাসি কেতার রান্নাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেলেন। এক দশকের মাথায় রান্নাবান্নার ওপর তাঁর প্রথম বই প্রকাশিত হয়। আর ৫১ বছর বয়সে তাঁর রান্নাবাটির কায়দা-কানুন নিয়ে ফরাসি একটি টেলিভিশন চ্যানেল সিরিজ-অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করে।
# গেঁটেবাতে আক্রান্ত আনা মোসেস একরকম পঙ্গু হয়ে ঘরে বসে ছিলেন। তখন তাঁর বয়স ৭৬ বছর। রং-তুলি ছুঁয়েও দেখেননি কখনো। নিঃসঙ্গ সময় কাটাতে সেই আনা হাতে তুলে নেন তুলি। ক্যানভাসে এঁকে চলেন একের পর এক ছবি। সেই ছবির খ্যাতি একটু একটু করে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। যুক্তরাষ্ট্র এমনকি অন্যান্য দেশেও তাঁর আঁকা ছবির কদর বাড়তে লাগল। দেখতে দেখতে রীতিমতো সেলিব্রিটি বনে গেলেন। এরপর জীবনের ২৫টি বছর ছবি এঁকেই কাটিয়েছেন তিনি। ১০১ বছর বয়সে মারা যান আনা মোসেস।
# ফাস্ট ফুড সংস্কৃতিতে যারা অভ্যস্ত, তাদের কাছে ম্যাকডোনাল্ডসের কদর আলাদা। ম্যাকডোনাল্ডস অভিজাত একটি ব্র্যান্ডের নাম, যার তৈরি হ্যামবার্গারের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। রে ক্রোক নামের এক ব্যক্তি সেই হ্যামবার্গার বানিয়েছিলেন ৫২ বছর বয়সে। স্বাদে ও গুণে অনন্য হ্যামবার্গারের খ্যাতি ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠা পায় ম্যাকডোনাল্ডস নামের একটি ব্র্যান্ড। ১৯৬৩ সালের মধ্যে ১০০ কোটিরও বেশি হ্যামবার্গার বিক্রি হয়ে যায়। অথচ এই রে ক্রোক তাঁর তারুণ্যের ১৭টি বসন্ত কাটিয়েছেন সেলসম্যানের কাজ করে। পরের ১৭ বছর তিনি দুধের সঙ্গে আইসক্রিম মিশিয়ে এক ধরনের পানীয় তৈরির কাজ করেছেন।
# ৬১ বছর বয়সে চিকিৎসা পেশা থেকে অবসর নেন রোজেট। এরপর মন দেন ভাষার কাজে। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে অভিধান তৈরির কাজটা তিনিই প্রথম করেন। ৭৩ বছর বয়সে অভিধানের কাজ শেষ করেন এবং রোজেট-অভিধান প্রকাশিত হয়। ৯০ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগপর্যন্ত ওই অভিধানে যত পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয়েছে, সবকিছুর সঙ্গে তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।
# রান্নাবাটি সম্পর্কে বেজায় ঔদাসীন্য ছিলেন জুলিয়া চাইল্ড। বয়স যখন ৩০, তখন তিনি ফ্রান্সে যান। সেখানে গিয়ে ফরাসি রান্নার এমনই ভক্ত বনে যান যে ফরাসি রন্ধনরীতি আয়ত্ত করা শুরু করেন তিনি। উদরপূর্তির জন্য উনুনে হাঁড়ি চড়িয়েই ক্ষান্ত হননি জুলিয়া। রান্নার বিন্দু-বিসর্গ পর্যন্ত জানলেন। একসময় ফরাসি কেতার রান্নাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেলেন। এক দশকের মাথায় রান্নাবান্নার ওপর তাঁর প্রথম বই প্রকাশিত হয়। আর ৫১ বছর বয়সে তাঁর রান্নাবাটির কায়দা-কানুন নিয়ে ফরাসি একটি টেলিভিশন চ্যানেল সিরিজ-অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করে।
আবুল হাসনাত
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট
সৌরশক্তিচালিত জাহাজে বিশ্বভ্রমণ
সৌরশক্তি ব্যবহারের অনেক সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আমরা নাকি এর যথোপযুক্ত ব্যবহার করছি না। এ রকমটিই মনে করছেন সুইজারল্যান্ডের সোলার অভিযাত্রী রাফায়েল ডোমইয়ান। সে কথা প্রমাণ করতেই একজন সহকর্মীকে নিয়ে নৌকায় চড়ে এরই মধ্যে বিশ্বভ্রমণে বেড়িয়ে পড়েছেন তিনি। হ্যাঁ, নৌকাটি অবশ্যই চলছে সৌরশক্তিতে। ৩১ মিটার লম্বা, ১৫ মিটার চওড়া। ওজন ৬০ টন এবং বহন করছে ১৩ টন ব্যাটারি। সৌরশক্তিতে চালিত এত বড় নৌকা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। সুইজারল্যান্ডের অভিযাত্রী রাফায়েল ডোমইয়ান এ নৌকাটির নাম দিয়েছেন ‘টুরানর’। গত সোমবার মরক্কোর এক নৌবন্দর থেকে রওনা হয়েছে সৌরশক্তি চালিত তার এ নৌকাটি। তিনি আশা করছেন, ১৪০ দিনের মধ্যেই নৌকাটি দিয়ে পাড়ি দিতে পারবেন ৪০ হাজারেরও বেশি কিলোমিটার পথ। আর এর মধ্য দিয়ে রাফায়েল দেখাতে চান, প্রকৃতিতে এখনও এমন সব শক্তি রয়েছে, যার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সম্ভব।
রাফায়েল ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘বিশ্বে পরিবর্তন ঘটাতে পারে এমন সব প্রযুক্তি আমাদের কাছেই আছে। আমরা আশা করছি, তা প্রয়োগ করে দেখাতে পারব। নৌকাটি তৈরি করা হয়েছে জার্মানির কিল বন্দরে। এটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ১২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউরো। আর এটি তৈরি করা তখনই সম্ভব হয়েছে, যখন সোলার ব্যবসায়ী ইমো স্ট্র্যোয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যে তিনি এ নৌকাটি কিনে নেবেন এবং যখন তিনি এর নির্মাণ খরচ দিয়েছিলেন। রাফায়েল ডোমইয়ান ও তার সমুদ্রযাত্রার সঙ্গী ফরাসি জেরার দাবোভিল পরিকল্পনা করেছেন, ৭ দশমিক ৫ নট গতিতে বিষুবরেখা বরাবর তারা নৌ-তরীটি নিয়ে ভাসবেন। তাদের প্রথম লক্ষ্য অ্যাটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেয়া। তারপর পানামা খাল হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে যাওয়া। সেখান থেকে তারা যাবেন ভারত মহাসাগরে। সুয়েজ খাল হয়ে ভূমধ্যসাগরে ফিরে আসার ইচ্ছা রয়েছে তাদের। শুধু সাগর পাড়ি দেয়া নয়, নৌকায় চড়ে সৌরশক্তি ব্যবহারের প্রচার চালানোর ইচ্ছাও রয়েছে তাদের। বিশেষ করে এটি যখন মিয়ামি, কানকুন, সানফ্রান্সিসকো, সিডনি, সিঙ্গাপুর এবং আবুধাবির মতো বড় বড় বন্দরে গিয়ে ভিড়বে।
রাফায়েল ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘বিশ্বে পরিবর্তন ঘটাতে পারে এমন সব প্রযুক্তি আমাদের কাছেই আছে। আমরা আশা করছি, তা প্রয়োগ করে দেখাতে পারব। নৌকাটি তৈরি করা হয়েছে জার্মানির কিল বন্দরে। এটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ১২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউরো। আর এটি তৈরি করা তখনই সম্ভব হয়েছে, যখন সোলার ব্যবসায়ী ইমো স্ট্র্যোয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যে তিনি এ নৌকাটি কিনে নেবেন এবং যখন তিনি এর নির্মাণ খরচ দিয়েছিলেন। রাফায়েল ডোমইয়ান ও তার সমুদ্রযাত্রার সঙ্গী ফরাসি জেরার দাবোভিল পরিকল্পনা করেছেন, ৭ দশমিক ৫ নট গতিতে বিষুবরেখা বরাবর তারা নৌ-তরীটি নিয়ে ভাসবেন। তাদের প্রথম লক্ষ্য অ্যাটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেয়া। তারপর পানামা খাল হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে যাওয়া। সেখান থেকে তারা যাবেন ভারত মহাসাগরে। সুয়েজ খাল হয়ে ভূমধ্যসাগরে ফিরে আসার ইচ্ছা রয়েছে তাদের। শুধু সাগর পাড়ি দেয়া নয়, নৌকায় চড়ে সৌরশক্তি ব্যবহারের প্রচার চালানোর ইচ্ছাও রয়েছে তাদের। বিশেষ করে এটি যখন মিয়ামি, কানকুন, সানফ্রান্সিসকো, সিডনি, সিঙ্গাপুর এবং আবুধাবির মতো বড় বড় বন্দরে গিয়ে ভিড়বে।
Tuesday, 21 September 2010
মশা দিয়ে মশা নিধন!!!
মশার অত্যাচারে বা মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়নি বাংলাদেশে এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। মশার কামড় বা অত্যাচার সহ্য করার পাশাপাশি মশার কামড়ে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়া আজ জনগণের একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষতিকর মশা নিধনে সম্প্র্রতি ‘টক্সোরিনকাইটিস স্প্লেন্ডেস’ (Toxorhynchites splendens) বা উপকারী মশা নামের এক জাতের মশা দ্বারা ক্ষতিকর মশা নিধনকল্পে গবেষণা চালিয়ে সফল হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেসের (আইবিএসসি) গবেষক মোরশীদুল হাসান। ২০০৬ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সোহরাব আলীর তত্ত্বাবধানে ‘টক্সোরিনকাইটিস স্প্লেন্ডেস অব বাংলাদেশ অ্যান্ড ইটস ইফিকেসি টু কন্ট্রোল আদার মসকিউটও’ (Toxorhynchites Splendens of Bangladesh and its efficacy to control other Mosquito) বিষয়ে অর্থাৎ উপকারী মশা দ্বারা ক্ষতিকর মশা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। উপকারী মশা ডেঙ্গুজ্বর ও গোদরোগের উৎস এডিস ও কিউলেক্স মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে। ফলে মানুষকে ক্ষতি করে বা কামড়ায় এমন মশা আর জন্ম নিতে পারে না। তাই এ মশার নাম দেওয়া হয়েছে উপকারী মশা।
গবেষক মোরশীদুল হাসান জানান, দৈহিক আকৃতিতে উপকারী মশা ক্ষতিকর মশার চেয়ে কয়েক গুণ বড়, পূর্ণাঙ্গ স্ত্রী বা পুরুষ মশা প্রায় এক সেন্টিমিটার, ডিম সাদাটে। লার্ভা থেকে পিউপায় পরিণত হওয়ার সময় এরা কোনো খাবার গ্রহণ করে না। তিনি বলেন, লার্ভা অবস্থায় এরা থাকে মাংসাশী। এ অবস্থায় এরা ক্ষতিকর ও রোগ বহনকারী মশার লার্ভা খেয়ে ওই সব মশার বিস্তার রোধ করে। এ প্রজাতির মশা গাছের কোটর, কাটা বাঁশের কোটর, ডাবের খোসা, গাছের তিন ডালের সংযোগ, প্লাস্টিক ও মাটির পাত্রের জমা পানিতে ডিম পাড়ে। গবেষক মোরশীদুল হাসান জানান, শেরপুর অঞ্চল থেকে উপকারী মশা সংগ্রহ করে গবেষণাগারে এনে এদের লালন-পালন ও প্রজনন করা হচ্ছে। ডিম ফুটে লার্ভা বের হওয়ার পর ওটাকে ক্ষতিকর মশার লার্ভা খাদ্য হিসেবে দেওয়া হয়। পূর্ণাঙ্গ মশাগুলো মশারির খাঁচায় রেখে চক্রাকারে বংশ প্রজননের মাধ্যমে উপকারী মশার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপকারী মশা লার্ভা অবস্থায় যেমন ক্ষতিকর মশার লার্ভা খেয়ে থাকে, তেমনি পূর্ণাঙ্গ মশাকেও ক্ষতিকর মশা নিধনে বিভিন্ন গবেষণার কাজে ব্যবহার করা যায়। একটি পূর্ণাঙ্গ উপকারী মশার আয়ু সাধারণত প্রায় চার মাস হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
টক্সোরিনকাইটিস স্প্লেন্ডেস স্ত্রী বা পুরুষ মশা মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীকে কামড়াতে পারে না। আবার স্ত্রী মশার ডিম বৃদ্ধির জন্য অন্যান্য ক্ষতিকর মশার মতো মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীর রক্ত শোষণেরও প্রয়োজন হয় না। এরা ফুলের মধু, ফলের বা কাণ্ডের রস ও অন্যান্য মশার লার্ভা খায়। গত বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় দুই হাজার এই উপকারী মশা ছাড়া হয়েছে। জানা গেছে, উপকারী মশা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএসসির গবেষণা মাঠের আশপাশের এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছেড়ে দেওয়ার পর ওই এলাকায় ক্ষতিকর মশার উপদ্রব ক্যাম্পাসের অন্যান্য এলাকার ক্ষতিকর মশার উপদ্রব থেকে অনেকাংশে কমে এসেছে।
সম্প্র্রতি সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএসসির গবেষণা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে মাটির বিভিন্ন বড় বড় পাত্রে, গাছের খোলে ও বিভিন্ন কোটরে রাখা আছে ক্ষতিকর মশার লার্ভা। আর সেসব পাত্র, খোল ও কোটরে উপকারী মশা ও উপকারী মশার লার্ভাও ছেড়ে দেওয়া আছে। ক্ষতিকর মশার লার্ভা তথা ক্ষতিকর মশা যদি একসময় শেষ হয়ে যায়, তখন এ উপকারী মশা কি খেয়ে বেঁচে থাকবে—এমন প্রশ্নের জবাবে গবেষক মোরশীদুল হাসান জানান, উপকারী মশার দ্বারা ক্ষতিকর মশা বা ক্ষতিকর মশার লার্ভা যদি একসময় শেষ হয়ে যায়, তবে উপকারী এ মশা মাছি বা অন্যান্য কীটপতঙ্গের লার্ভা বা গাছপালার পাতার রস খেয়ে বেঁচে থাকবে। উপকারী মশা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী—এ প্রশ্নের জবাবে গবেষক মোরশীদুল হাসান বলেন, ঢাকা শহরসহ দেশের যেসব জায়গায় মশার উপদ্রব বেশি, সেসব জায়গায় প্রচুর পরিমাণে এ মশা ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। তিনি বলেন, গবেষণা শেষে অধিকমাত্রায় এ মশার প্রজনন ঘটিয়ে তথা বংশবৃদ্ধি ঘটিয়ে সারা দেশে এ জাতের মশা ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারলে দেশের আপামর জনগণ যেমন একদিকে ক্ষতিকর মশার কামড় বা অত্যাচার থেকে রক্ষা পাবে, তেমনি অন্যদিকে জনগণ ক্ষতিকর মশার কামড়জনিত রোগ যেমন ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, গোদ ইত্যাদি থেকেও সহজেই পরিত্রাণ পাবে। আর এ ব্যবস্থা কার্যকর করতে পারলেই তাঁর গবেষণার উদ্দেশ্য সার্থক হয়ে উঠবে বলে তিনি মনে করেন। ক্ষতিকর মশা নিধনের এই প্রক্রিয়াটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে মশার উপদ্রব কিছুটা হলেও কমতে পারে।
গবেষক মোরশীদুল হাসান জানান, দৈহিক আকৃতিতে উপকারী মশা ক্ষতিকর মশার চেয়ে কয়েক গুণ বড়, পূর্ণাঙ্গ স্ত্রী বা পুরুষ মশা প্রায় এক সেন্টিমিটার, ডিম সাদাটে। লার্ভা থেকে পিউপায় পরিণত হওয়ার সময় এরা কোনো খাবার গ্রহণ করে না। তিনি বলেন, লার্ভা অবস্থায় এরা থাকে মাংসাশী। এ অবস্থায় এরা ক্ষতিকর ও রোগ বহনকারী মশার লার্ভা খেয়ে ওই সব মশার বিস্তার রোধ করে। এ প্রজাতির মশা গাছের কোটর, কাটা বাঁশের কোটর, ডাবের খোসা, গাছের তিন ডালের সংযোগ, প্লাস্টিক ও মাটির পাত্রের জমা পানিতে ডিম পাড়ে। গবেষক মোরশীদুল হাসান জানান, শেরপুর অঞ্চল থেকে উপকারী মশা সংগ্রহ করে গবেষণাগারে এনে এদের লালন-পালন ও প্রজনন করা হচ্ছে। ডিম ফুটে লার্ভা বের হওয়ার পর ওটাকে ক্ষতিকর মশার লার্ভা খাদ্য হিসেবে দেওয়া হয়। পূর্ণাঙ্গ মশাগুলো মশারির খাঁচায় রেখে চক্রাকারে বংশ প্রজননের মাধ্যমে উপকারী মশার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপকারী মশা লার্ভা অবস্থায় যেমন ক্ষতিকর মশার লার্ভা খেয়ে থাকে, তেমনি পূর্ণাঙ্গ মশাকেও ক্ষতিকর মশা নিধনে বিভিন্ন গবেষণার কাজে ব্যবহার করা যায়। একটি পূর্ণাঙ্গ উপকারী মশার আয়ু সাধারণত প্রায় চার মাস হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
টক্সোরিনকাইটিস স্প্লেন্ডেস স্ত্রী বা পুরুষ মশা মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীকে কামড়াতে পারে না। আবার স্ত্রী মশার ডিম বৃদ্ধির জন্য অন্যান্য ক্ষতিকর মশার মতো মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীর রক্ত শোষণেরও প্রয়োজন হয় না। এরা ফুলের মধু, ফলের বা কাণ্ডের রস ও অন্যান্য মশার লার্ভা খায়। গত বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় দুই হাজার এই উপকারী মশা ছাড়া হয়েছে। জানা গেছে, উপকারী মশা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএসসির গবেষণা মাঠের আশপাশের এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছেড়ে দেওয়ার পর ওই এলাকায় ক্ষতিকর মশার উপদ্রব ক্যাম্পাসের অন্যান্য এলাকার ক্ষতিকর মশার উপদ্রব থেকে অনেকাংশে কমে এসেছে।
সম্প্র্রতি সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএসসির গবেষণা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে মাটির বিভিন্ন বড় বড় পাত্রে, গাছের খোলে ও বিভিন্ন কোটরে রাখা আছে ক্ষতিকর মশার লার্ভা। আর সেসব পাত্র, খোল ও কোটরে উপকারী মশা ও উপকারী মশার লার্ভাও ছেড়ে দেওয়া আছে। ক্ষতিকর মশার লার্ভা তথা ক্ষতিকর মশা যদি একসময় শেষ হয়ে যায়, তখন এ উপকারী মশা কি খেয়ে বেঁচে থাকবে—এমন প্রশ্নের জবাবে গবেষক মোরশীদুল হাসান জানান, উপকারী মশার দ্বারা ক্ষতিকর মশা বা ক্ষতিকর মশার লার্ভা যদি একসময় শেষ হয়ে যায়, তবে উপকারী এ মশা মাছি বা অন্যান্য কীটপতঙ্গের লার্ভা বা গাছপালার পাতার রস খেয়ে বেঁচে থাকবে। উপকারী মশা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী—এ প্রশ্নের জবাবে গবেষক মোরশীদুল হাসান বলেন, ঢাকা শহরসহ দেশের যেসব জায়গায় মশার উপদ্রব বেশি, সেসব জায়গায় প্রচুর পরিমাণে এ মশা ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। তিনি বলেন, গবেষণা শেষে অধিকমাত্রায় এ মশার প্রজনন ঘটিয়ে তথা বংশবৃদ্ধি ঘটিয়ে সারা দেশে এ জাতের মশা ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারলে দেশের আপামর জনগণ যেমন একদিকে ক্ষতিকর মশার কামড় বা অত্যাচার থেকে রক্ষা পাবে, তেমনি অন্যদিকে জনগণ ক্ষতিকর মশার কামড়জনিত রোগ যেমন ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, গোদ ইত্যাদি থেকেও সহজেই পরিত্রাণ পাবে। আর এ ব্যবস্থা কার্যকর করতে পারলেই তাঁর গবেষণার উদ্দেশ্য সার্থক হয়ে উঠবে বলে তিনি মনে করেন। ক্ষতিকর মশা নিধনের এই প্রক্রিয়াটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে মশার উপদ্রব কিছুটা হলেও কমতে পারে।
কুদরাত-ই-খুদা
তারিখ: ০৫-০৯-২০১০
Prothom-Alo
ওরা স্বপ্ন ফেরি করে
১৭ শতকের দিকে জাপানের টোকিও ও ওসাকা শহরে নৃত্য ও সংগীতশিল্পী-রূপে গেইশাদের আবির্ভাব। প্রথমদিকে পেশাটিতে পুরুষেরা থাকলেও ১৮ শতকের মাঝামাঝি থেকে নারীরা এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য বিস্তার করতে থাকে। এ ধারা এখনো বজায় আছে। পুরুষের ইন্দ্রীয় সুখের জন্য গেইশা-নারীরা কাজ করলেও এরা সাধারণত শয্যাসঙ্গী হয় না।
‘আমি মানুষের চোখ দেখে দেখে ক্লান্ত। আমি যা নই, তা হওয়ার ভান করে ক্লান্ত, তোষামোদ পেতে পেতে ক্লান্ত। আমি নিজেকে একজন দিলখোলা সৎ মানুষ হিসেবে দেখতে চাই, যা অনুভব করি তা করতে চাই। কিন্তু পেশার কারণে তা কোনো দিনও হবে না।’ জাপানের কিয়োটো শহরের জীবন নিয়ে ক্লান্ত এক গেইশা-নারীর বয়ান এটি। ওই দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ও সম্পদশালী ভোগী পুরুষের মনোরঞ্জনে নিয়োজিত নারীদের গেইশা নামে আখ্যায়িত করা হয়। এসব নারী জীবিকার জন্য ওই সব পুরুষের কাছে ফেরি করে ফেরে তাদের শিল্পীসত্তা।
কঠোর বিধিনিষেধ আর গোপনীয়তার বেড়াজালে বাঁধা গেইশাদের জীবন। ১৭ শতকের দিকে জাপানের টোকিও ও ওসাকা শহরে নৃত্য ও সংগীতশিল্পী-রূপে এদের আবির্ভাব। প্রথমদিকে পেশাটিতে পুরুষেরা থাকলেও ১৮ শতকের মাঝামাঝি থেকে নারীরা এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য বিস্তার করতে থাকে। এ ধারা এখনো বজায় আছে। পুরুষের ইন্দ্রীয় সুখের জন্য গেইশা-নারীরা কাজ করলেও এরা সাধারণত শয্যাসঙ্গী হয় না। কেউ যদি হয়, তবে সেটা তার একান্তই ব্যক্তিগত, সেখানে তার ইচ্ছা ও প্রেমই থাকে মুখ্য। গেইশারা পতিতা নয়, বরং বলা যায় এরা ক্ষমতাবান পুরুষের মাঝে স্বপ্ন, বিলাস, রোমান্স ও স্বাতন্ত্র্য জাগিয়ে তুলতে নিজেদের মেধা-মননের পসরা নিয়ে হাজির থাকে।
এখনকার দিনে জাপানে হাতেগোনা যেসব নারী এ পেশায় আসে, তাদের মূলত রোমান্স ও ভালোবাসার প্রতিমূর্তি হিসেবেই দেখা হয়। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের সময় জন্মসূত্রে ও টিকে থাকার জন্য এ পেশায় আসতে বাধ্য হতো নারীরা। গেইশারা সাধারণত ঐতিহ্যবাহী সিল্কের কিমোনো পরে, আর তাদের চেহারা ঢাকা থাকে পুরু মেকআপে। সেই সঙ্গে মার্জিত ব্যবহার হয় তাদের আরেক আকর্ষণ। এসব নারীকে জাপানের ঐতিহ্যবাহী চা পানের অনুষ্ঠান সম্পর্কে রীতিমতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ‘সামিসেন’ নামের বাদ্যযন্ত্র বাজানো ও নাচের ওপরও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাদের। নাচই হলো লোকসম্মুখে এসব নারীর মেধা প্রকাশের মূল মাধ্যম। তবে এদের মেধার সত্যিকার পরিচয় পাওয়া যায় নৈশ পার্টিগুলোতে। এসব পার্টিতে পুরুষেরা ডিনার করতে বসলে তাদের হাতে হাসিমুখে সুরার পাত্র তুলে দেয় মোহময়ী গেইশারা। তবে পুরুষেরা যাতে মাতাল না হয়, সে দিকেও কঠোর নজর থাকে এসব মোহিনীর। আকণ্ঠ পানের পর ক্ষমতাধরেরা আয়েশ করে বসলে গেইশারা হালকা তানে কণ্ঠে তুলে নেয় সুর। চারদিকে ছড়িয়ে দেয় সুরের মায়াজাল। তবে জাপানি পুরুষেরা এসব নারীকে সবচেয়ে বেশি কদর করে গুরুত্বপূর্ণ ও গুরুগম্ভীর আলাপে তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য। গেইশাদের অংশগ্রহণে ক্লান্তিকর কথাবার্তাও তখন হয়ে ওঠে আনন্দের। তাই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলোতে অংশ নিতে গেইশাদের সাম্প্রতিক খবরাখবর থেকে শুরু করে নাটক-সিনেমা-সুমো জগতের নানা গুজব সম্পর্কেও খুব ভালোভাবে ওয়াকিবহাল থাকতে হয়।
গুরুত্বপূর্ণ নানা বৈঠকে অংশ নেওয়া গেইশারা গোপনীয়তা রক্ষার ক্ষেত্রেও ভীষণ পারঙ্গম। মেকআপে ঢাকা তাদের মুখমণ্ডলে খুব কমই আবেগ খেলে। মক্কেলের গোপন তথ্য গোপন রাখতে নীরবতাকে তারা বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে। কঠোর শৃঙ্খলা আর মেধা দিয়ে তারা জীবনের জন্য নির্মাণ করে চলে সুন্দরকে। এরা নিজেকে পুরুষের চোখে আদর্শ নারী করে তোলে। হয়ে ওঠে জীবন্ত শিল্প।
কিন্তু রংতুলির আঁচড় আর নিয়মশৃঙ্খলা, নীরবতার বর্মে ঢাকা পড়ে থাকে এসব নারীর ব্যক্তিজীবনের সব রং, মাধুরী, চাওয়া-পাওয়া। পুরুষের চোখে, জাপানি সমাজের চোখে এরা কেবলই গেইশা। তাই কিয়োটোর প্রভাবশালী এক পুরুষ জীবনের দীর্ঘ সময় গেইশাদের সঙ্গে কাটিয়েও খুবই নির্মোহভাবে বলতে পারেন, ‘আমি রোমাঞ্চ ভালোবাসি, বাস্তব নয়। মোহিনী জাল সৃষ্টিতে গেইশারা কী কৌশল খাটায়, তা আমার জানার দরকার নেই। আমি তাদের সঙ্গ পছন্দ করি। কিন্তু তাদের জীবনের দুঃখের কাসুন্দি শুনতে চাই না। আমি তাদের স্বপ্ন হিসেবেই দেখতে চাই। আমার জন্য স্বপ্ন জিইয়ে রাখা তাদের জন্যও জরুরি। এটাই আমাদের দুই পক্ষের সম্পর্ক—ব্যস, শেষ।’
‘আমি মানুষের চোখ দেখে দেখে ক্লান্ত। আমি যা নই, তা হওয়ার ভান করে ক্লান্ত, তোষামোদ পেতে পেতে ক্লান্ত। আমি নিজেকে একজন দিলখোলা সৎ মানুষ হিসেবে দেখতে চাই, যা অনুভব করি তা করতে চাই। কিন্তু পেশার কারণে তা কোনো দিনও হবে না।’ জাপানের কিয়োটো শহরের জীবন নিয়ে ক্লান্ত এক গেইশা-নারীর বয়ান এটি। ওই দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ও সম্পদশালী ভোগী পুরুষের মনোরঞ্জনে নিয়োজিত নারীদের গেইশা নামে আখ্যায়িত করা হয়। এসব নারী জীবিকার জন্য ওই সব পুরুষের কাছে ফেরি করে ফেরে তাদের শিল্পীসত্তা।
কঠোর বিধিনিষেধ আর গোপনীয়তার বেড়াজালে বাঁধা গেইশাদের জীবন। ১৭ শতকের দিকে জাপানের টোকিও ও ওসাকা শহরে নৃত্য ও সংগীতশিল্পী-রূপে এদের আবির্ভাব। প্রথমদিকে পেশাটিতে পুরুষেরা থাকলেও ১৮ শতকের মাঝামাঝি থেকে নারীরা এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য বিস্তার করতে থাকে। এ ধারা এখনো বজায় আছে। পুরুষের ইন্দ্রীয় সুখের জন্য গেইশা-নারীরা কাজ করলেও এরা সাধারণত শয্যাসঙ্গী হয় না। কেউ যদি হয়, তবে সেটা তার একান্তই ব্যক্তিগত, সেখানে তার ইচ্ছা ও প্রেমই থাকে মুখ্য। গেইশারা পতিতা নয়, বরং বলা যায় এরা ক্ষমতাবান পুরুষের মাঝে স্বপ্ন, বিলাস, রোমান্স ও স্বাতন্ত্র্য জাগিয়ে তুলতে নিজেদের মেধা-মননের পসরা নিয়ে হাজির থাকে।
এখনকার দিনে জাপানে হাতেগোনা যেসব নারী এ পেশায় আসে, তাদের মূলত রোমান্স ও ভালোবাসার প্রতিমূর্তি হিসেবেই দেখা হয়। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের সময় জন্মসূত্রে ও টিকে থাকার জন্য এ পেশায় আসতে বাধ্য হতো নারীরা। গেইশারা সাধারণত ঐতিহ্যবাহী সিল্কের কিমোনো পরে, আর তাদের চেহারা ঢাকা থাকে পুরু মেকআপে। সেই সঙ্গে মার্জিত ব্যবহার হয় তাদের আরেক আকর্ষণ। এসব নারীকে জাপানের ঐতিহ্যবাহী চা পানের অনুষ্ঠান সম্পর্কে রীতিমতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ‘সামিসেন’ নামের বাদ্যযন্ত্র বাজানো ও নাচের ওপরও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাদের। নাচই হলো লোকসম্মুখে এসব নারীর মেধা প্রকাশের মূল মাধ্যম। তবে এদের মেধার সত্যিকার পরিচয় পাওয়া যায় নৈশ পার্টিগুলোতে। এসব পার্টিতে পুরুষেরা ডিনার করতে বসলে তাদের হাতে হাসিমুখে সুরার পাত্র তুলে দেয় মোহময়ী গেইশারা। তবে পুরুষেরা যাতে মাতাল না হয়, সে দিকেও কঠোর নজর থাকে এসব মোহিনীর। আকণ্ঠ পানের পর ক্ষমতাধরেরা আয়েশ করে বসলে গেইশারা হালকা তানে কণ্ঠে তুলে নেয় সুর। চারদিকে ছড়িয়ে দেয় সুরের মায়াজাল। তবে জাপানি পুরুষেরা এসব নারীকে সবচেয়ে বেশি কদর করে গুরুত্বপূর্ণ ও গুরুগম্ভীর আলাপে তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য। গেইশাদের অংশগ্রহণে ক্লান্তিকর কথাবার্তাও তখন হয়ে ওঠে আনন্দের। তাই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলোতে অংশ নিতে গেইশাদের সাম্প্রতিক খবরাখবর থেকে শুরু করে নাটক-সিনেমা-সুমো জগতের নানা গুজব সম্পর্কেও খুব ভালোভাবে ওয়াকিবহাল থাকতে হয়।
গুরুত্বপূর্ণ নানা বৈঠকে অংশ নেওয়া গেইশারা গোপনীয়তা রক্ষার ক্ষেত্রেও ভীষণ পারঙ্গম। মেকআপে ঢাকা তাদের মুখমণ্ডলে খুব কমই আবেগ খেলে। মক্কেলের গোপন তথ্য গোপন রাখতে নীরবতাকে তারা বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে। কঠোর শৃঙ্খলা আর মেধা দিয়ে তারা জীবনের জন্য নির্মাণ করে চলে সুন্দরকে। এরা নিজেকে পুরুষের চোখে আদর্শ নারী করে তোলে। হয়ে ওঠে জীবন্ত শিল্প।
কিন্তু রংতুলির আঁচড় আর নিয়মশৃঙ্খলা, নীরবতার বর্মে ঢাকা পড়ে থাকে এসব নারীর ব্যক্তিজীবনের সব রং, মাধুরী, চাওয়া-পাওয়া। পুরুষের চোখে, জাপানি সমাজের চোখে এরা কেবলই গেইশা। তাই কিয়োটোর প্রভাবশালী এক পুরুষ জীবনের দীর্ঘ সময় গেইশাদের সঙ্গে কাটিয়েও খুবই নির্মোহভাবে বলতে পারেন, ‘আমি রোমাঞ্চ ভালোবাসি, বাস্তব নয়। মোহিনী জাল সৃষ্টিতে গেইশারা কী কৌশল খাটায়, তা আমার জানার দরকার নেই। আমি তাদের সঙ্গ পছন্দ করি। কিন্তু তাদের জীবনের দুঃখের কাসুন্দি শুনতে চাই না। আমি তাদের স্বপ্ন হিসেবেই দেখতে চাই। আমার জন্য স্বপ্ন জিইয়ে রাখা তাদের জন্যও জরুরি। এটাই আমাদের দুই পক্ষের সম্পর্ক—ব্যস, শেষ।’
সুমাইয়া তাজারিন
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক
সোনাদানার কাহিনি
অষ্টম শতাব্দীতে জাপানের প্রথম রাজধানী নারার ডোদাই-জি বৌদ্ধ মঠে একটা বিশাল (৫৩ ফুট উঁচু) ঢালাই ব্রোঞ্জের বুদ্ধমূর্তি রাখার জন্য বড় একটা হল নির্মাণ করা হয়। মূর্তিটির ওজন ছিল এক মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি এবং এটা কোয়ার্টার টন সোনায় মোড়ানো ছিল।
এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় স্বর্ণপিণ্ডের নাম হলো ‘ওয়েলকাম স্ট্রেঞ্জার’, ওজন প্রায় ২০০ পাউন্ড। ১৮৬৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বালারাটের কাছে জন ডিমন এবং রিচার্ড ওটেস পিণ্ডটি আবিষ্কার করেন।
ইংরেজ অভিযাত্রী মার্টিন ফ্রবিশার ১৫৭৮ সালে ইংল্যান্ডে রীতিমতো গোল্ড ফিভার তৈরি করে ফেলেন, তিনি বাফিন দ্বীপ থেকে ২০০ টন চকচকে সোনার আকরিক নিয়ে ফিরে আসেন। আরও সোনা পাওয়ার আশায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আকরিকটা ছিল শুধু আয়ন পাইরাইট (বোকার স্বর্ণ)। শেষ পর্যন্ত ওটাকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হয়।
মধ্যযুগীয় আলকেমিস্টরা সস্তা ধাতু থেকে সোনা তৈরির পথ খুঁজছিলেন। তাঁরা ব্যর্থ হন আর এর ফলে তাঁরা অবজ্ঞার শিকারও হন। যা হোক, এই খোঁজাখুঁজির ফলে তাঁরা শক্তিশালী এসিড আবিষ্কার করে ফেলেন: সালফিউরিক এসিড, নাইট্রিক এসিড এবং হাইড্রোক্লোরিক এসিড—এই পদার্থগুলো আধুনিক শিল্পে সোনার চেয়েও দামি। এর জন্য তাঁরা কোনো কৃতিত্ব পান না।
প্রতি আউন্স সোনা পাওয়ার জন্য খনিশ্রমিকদের ২ দশমিক ৫ মাইল পর্যন্ত খনন করতে হয়।
মার্থা ওয়াশিংটনের সিলভার সার্ভিস ছিল রুপার প্রথম উৎস, যে রুপা প্রথম ইউএস মুদ্রায় ব্যবহূত হয়।
উইলিয়াম হাইড ওলেস্টনের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্লাটিনাম নিয়ে কাজ করেছেন, বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য একে নমনীয় করার চেষ্টা করেছেন, অত্যন্ত গোপনীয়তা বজায় রেখে গবেষণা করেছেন তিনি, তাঁর পরীক্ষাগারে কারও ঢোকার অনুমতি ছিল না। ১৮০০ সালের দিকে ধাতুটি নিয়ে কাজ করে ওলেস্টন বেশ অর্থ উপার্জন করেছিলেন। প্লাটিনাম এমনিতে খুব ভারী, দুর্লভ এবং সোনার চেয়েও নিষ্ক্রিয়।
সাগরে থাকা সোনার পরিমাণ নয় মিলিয়ন টন, মানুষের ইতিহাসে খনি থেকে মোট যে পরিমাণ স্বর্ণ উত্তোলন করা হয়েছে, তার প্রায় ১৮০ গুণ। সাগরে সোনা এমনভাবে ছড়ানো যে সেখান থেকে নিষ্কাশন করাটা লাভজনক নয়।
হীরা হলো একমাত্র রত্ন, যার মাত্র একটি মৌল কার্বন দিয়ে গঠিত। যদিও স্ফটিক স্বচ্ছ, কিন্তু গুঁড়ো করার পর ওটা হয়ে যায় কালো। রত্নের কাঠিন্যের ওপর নির্ভর করে হীরাকে ১৪০০ থেকে ১৬৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মাঝে সম্পূর্ণরূপে দহন করা যায়।
স্প্যানিশদের দক্ষিণ আমেরিকা জয়ের আগে ইন্ডিয়ানদের (ইনকা) কাছে কোনো লোহা ছিল না। তার বদলে তাদের কাছে ছিল প্রচুর পরিমাণে সোনা। ওই সোনা শুধু সাজসজ্জা বা অলংকারেই ব্যবহূত হতো তা নয়, বরং প্রতিদিনকার নিত্য ব্যবহার্য বস্তু যেমন—পেরেক, খাবারের তৈজসপত্র, চিরুনি তৈরিতেও ব্যবহূত হতো।
মিসরীয়রা তাদের নেতাদের সমাধিস্থ করার সময় মরদেহের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ সোনা-রুপা দিয়ে দিত। কারণ তাদের ধারণা ছিল, মৃত নেতারা পরকালে ওসব ব্যবহার করবে, যা তাদের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিচ্ছিল। কবরচোরেরা কবর থেকে, তাদের উদ্দেশ্য যা-ই থাকুক না কেন, অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সোনা ও রুপা ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে মিসরীয় সমাজের চাকা সচল করতে সাহায্য করে।
মিসরীয় ইতিহাসের প্রথম দিকে রুপার মূল্য ছিল সোনার চেয়েও বেশি। কারণ, রুপাকে পিণ্ড আকারে খুব কমই পাওয়া যেত।
বছরে ৪০০ টন সোনা লাভের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার র্যান্ড গ্রুপকে তাদের খনিগুলো থেকে ৬০ মিলিয়ন টন আকরিক উত্তোলন ও চূর্ণ করতে হয়।
অ্যাডমিরাল স্যার ক্লাউডসলি শোভেল, ব্রিটিশ নৌবহরের কমান্ডার-ইন-চিফ, ১৭০৭ সালে একজন বৃদ্ধ মহিলার হাতে নিহত হন। সিসিলি দ্বীপপুঞ্জের পাথরে ধাক্কা লেগে জাহাজ হারিয়ে তিনি বহু কষ্টে তীরে পৌঁছে ছিলেন। কিন্তু বৃদ্ধা তাঁকে এই বিশ্বাসে (উপকূলীয় অধিবাসীদের মধ্যে তখন এর প্রচলন ছিল) হত্যা করে, যে দেহ ভেসে আসে, সেটা পরিত্যক্ত। সে অ্যাডমিরালের আঙুলের পান্নার আংটিটির বৈধ দাবিদার বলেও মনে করে।
ভাষান্তর: হাসান খুরশীদ
এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় স্বর্ণপিণ্ডের নাম হলো ‘ওয়েলকাম স্ট্রেঞ্জার’, ওজন প্রায় ২০০ পাউন্ড। ১৮৬৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বালারাটের কাছে জন ডিমন এবং রিচার্ড ওটেস পিণ্ডটি আবিষ্কার করেন।
ইংরেজ অভিযাত্রী মার্টিন ফ্রবিশার ১৫৭৮ সালে ইংল্যান্ডে রীতিমতো গোল্ড ফিভার তৈরি করে ফেলেন, তিনি বাফিন দ্বীপ থেকে ২০০ টন চকচকে সোনার আকরিক নিয়ে ফিরে আসেন। আরও সোনা পাওয়ার আশায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আকরিকটা ছিল শুধু আয়ন পাইরাইট (বোকার স্বর্ণ)। শেষ পর্যন্ত ওটাকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হয়।
মধ্যযুগীয় আলকেমিস্টরা সস্তা ধাতু থেকে সোনা তৈরির পথ খুঁজছিলেন। তাঁরা ব্যর্থ হন আর এর ফলে তাঁরা অবজ্ঞার শিকারও হন। যা হোক, এই খোঁজাখুঁজির ফলে তাঁরা শক্তিশালী এসিড আবিষ্কার করে ফেলেন: সালফিউরিক এসিড, নাইট্রিক এসিড এবং হাইড্রোক্লোরিক এসিড—এই পদার্থগুলো আধুনিক শিল্পে সোনার চেয়েও দামি। এর জন্য তাঁরা কোনো কৃতিত্ব পান না।
প্রতি আউন্স সোনা পাওয়ার জন্য খনিশ্রমিকদের ২ দশমিক ৫ মাইল পর্যন্ত খনন করতে হয়।
মার্থা ওয়াশিংটনের সিলভার সার্ভিস ছিল রুপার প্রথম উৎস, যে রুপা প্রথম ইউএস মুদ্রায় ব্যবহূত হয়।
উইলিয়াম হাইড ওলেস্টনের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্লাটিনাম নিয়ে কাজ করেছেন, বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য একে নমনীয় করার চেষ্টা করেছেন, অত্যন্ত গোপনীয়তা বজায় রেখে গবেষণা করেছেন তিনি, তাঁর পরীক্ষাগারে কারও ঢোকার অনুমতি ছিল না। ১৮০০ সালের দিকে ধাতুটি নিয়ে কাজ করে ওলেস্টন বেশ অর্থ উপার্জন করেছিলেন। প্লাটিনাম এমনিতে খুব ভারী, দুর্লভ এবং সোনার চেয়েও নিষ্ক্রিয়।
সাগরে থাকা সোনার পরিমাণ নয় মিলিয়ন টন, মানুষের ইতিহাসে খনি থেকে মোট যে পরিমাণ স্বর্ণ উত্তোলন করা হয়েছে, তার প্রায় ১৮০ গুণ। সাগরে সোনা এমনভাবে ছড়ানো যে সেখান থেকে নিষ্কাশন করাটা লাভজনক নয়।
হীরা হলো একমাত্র রত্ন, যার মাত্র একটি মৌল কার্বন দিয়ে গঠিত। যদিও স্ফটিক স্বচ্ছ, কিন্তু গুঁড়ো করার পর ওটা হয়ে যায় কালো। রত্নের কাঠিন্যের ওপর নির্ভর করে হীরাকে ১৪০০ থেকে ১৬৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মাঝে সম্পূর্ণরূপে দহন করা যায়।
স্প্যানিশদের দক্ষিণ আমেরিকা জয়ের আগে ইন্ডিয়ানদের (ইনকা) কাছে কোনো লোহা ছিল না। তার বদলে তাদের কাছে ছিল প্রচুর পরিমাণে সোনা। ওই সোনা শুধু সাজসজ্জা বা অলংকারেই ব্যবহূত হতো তা নয়, বরং প্রতিদিনকার নিত্য ব্যবহার্য বস্তু যেমন—পেরেক, খাবারের তৈজসপত্র, চিরুনি তৈরিতেও ব্যবহূত হতো।
মিসরীয়রা তাদের নেতাদের সমাধিস্থ করার সময় মরদেহের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ সোনা-রুপা দিয়ে দিত। কারণ তাদের ধারণা ছিল, মৃত নেতারা পরকালে ওসব ব্যবহার করবে, যা তাদের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিচ্ছিল। কবরচোরেরা কবর থেকে, তাদের উদ্দেশ্য যা-ই থাকুক না কেন, অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সোনা ও রুপা ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে মিসরীয় সমাজের চাকা সচল করতে সাহায্য করে।
মিসরীয় ইতিহাসের প্রথম দিকে রুপার মূল্য ছিল সোনার চেয়েও বেশি। কারণ, রুপাকে পিণ্ড আকারে খুব কমই পাওয়া যেত।
বছরে ৪০০ টন সোনা লাভের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার র্যান্ড গ্রুপকে তাদের খনিগুলো থেকে ৬০ মিলিয়ন টন আকরিক উত্তোলন ও চূর্ণ করতে হয়।
অ্যাডমিরাল স্যার ক্লাউডসলি শোভেল, ব্রিটিশ নৌবহরের কমান্ডার-ইন-চিফ, ১৭০৭ সালে একজন বৃদ্ধ মহিলার হাতে নিহত হন। সিসিলি দ্বীপপুঞ্জের পাথরে ধাক্কা লেগে জাহাজ হারিয়ে তিনি বহু কষ্টে তীরে পৌঁছে ছিলেন। কিন্তু বৃদ্ধা তাঁকে এই বিশ্বাসে (উপকূলীয় অধিবাসীদের মধ্যে তখন এর প্রচলন ছিল) হত্যা করে, যে দেহ ভেসে আসে, সেটা পরিত্যক্ত। সে অ্যাডমিরালের আঙুলের পান্নার আংটিটির বৈধ দাবিদার বলেও মনে করে।
ভাষান্তর: হাসান খুরশীদ
পৃথিবী বদলে দেওয়া সাত দাওয়াই
আফিম
আফিমের নাম শোনেননি এমন কে আছেন? রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে আফিম একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ হিসেবে পরিচিত। মানসিক অস্থিরতা ও বেদনানাশক ওষুধ হিসেবে এখনও বহুলভাবে ব্যবহার হচ্ছে।
গুটিবসন্ত টিকা
অ্যাডওয়ার্ড জেনার ১৭৯৮ সালে স্যাঁতসেঁতে অঞ্চলের গো-বসন্ত দূর করার জন্য প্রথম টিকা তৈরি করেন। পরে এই টিকা গুটিবসন্তের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়। ১৮৮৫ সালে মন্ট্রিয়েলে হঠাৎ ট্রেন-ভ্রমণকারীদের মধ্যে গুটিবসন্ত মহামারীরূপে দেখা দিলে আক্রান্ত যাত্রীদের দ্রুত এই প্রতিষেধক দেওয়া হয়।
স্যালভারসান
১৯১০ সালে পাওয়েল হারলিস সিফিলিস রোগের সংক্রমণের প্রতিরোধে স্যালভারসন প্রতিষেধক হিসেবে প্রথম পরিচয় করিয়ে দেন। তাঁর এই বৈপ্লবিক উদ্ভাবনের জন্য এখন তাঁকে কেমোথেরাপির জনক বলা হয়।
ইনসুলিন
১৯২০ সালের শুরুর দিকের কথা। ফ্রেডরিক বেন্টিং এবং তাঁর সহকর্মীরা না খেয়ে থাকা বহুমূত্র রোগীদের শরীর থেকে ইনসুলিন হরমোন আলাদা করেন। তার আগে অল্প কিছু ওষুধ ছিল, যা কি না অনেক রোগীরই উপশমে কাজে লেগেছিল। ইনসুলিন এখন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের প্রধান ওষুধ।
পেনিসিলিন
পেনিসিলিন আবিষ্কৃত হয় ১৯২৮ সালে কিন্তু তখন এটিকে হেলাফেলা করা হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আবার নতুন করে এই প্রতিষেধকটি রোগসংক্রমিত একটি রেঞ্জের সেনাসদস্যদের চিকিৎসায় ব্যবহূত হয়। তারপর থেকে পেনিসিলিন ব্যবহার হচ্ছে নানা রোগের চিকিৎসায়।
ইনোভিড
১৯৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ইনোভিড নামের একটি জন্মনিরোধক ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছিল। আর এই বড়ির উদ্ভাবনের ফলে ঘটে যায় এক বিপ্লব। যার প্রভাবে কোটি কোটি মানুষ বেঁচে যায়। ১৯৭০ সালে এটা যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা সমস্যা দূর করার কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সে সময় অনেক স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞ এটির বিরোধিতা করেছিলেন। বর্তমান সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য এটিই সবচেয়ে উন্নত পদ্ধতি।
থ্যালিডোমাইড
মানসিক অস্থিরতা দমনের এই ওষুধ আবিষ্কৃত হয় ১৯৫০ সালের শেষ ও ১৯৬০ সালের শুরুর দিকে। গর্ভধারণকালীন সময়ে অনেকে ওষুধটি সেবন করেছিলেন। ফলে তাঁদের শিশুরা মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছিল কল্পনাতীতভাবে। চিকিৎসাবিদ্যার যখন চরম দুর্যোগ, তখন এটি একটি আমূল পরিবর্তন এনেছিল পৃথিবীতে। ১৯৯০ সালে থ্যালিডোমাইডকে নতুনভাবে কুষ্ঠ ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসার জটিলতা দূর করার কাজে ব্যবহার করা শুরু হয়।
আফিমের নাম শোনেননি এমন কে আছেন? রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে আফিম একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ হিসেবে পরিচিত। মানসিক অস্থিরতা ও বেদনানাশক ওষুধ হিসেবে এখনও বহুলভাবে ব্যবহার হচ্ছে।
গুটিবসন্ত টিকা
অ্যাডওয়ার্ড জেনার ১৭৯৮ সালে স্যাঁতসেঁতে অঞ্চলের গো-বসন্ত দূর করার জন্য প্রথম টিকা তৈরি করেন। পরে এই টিকা গুটিবসন্তের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়। ১৮৮৫ সালে মন্ট্রিয়েলে হঠাৎ ট্রেন-ভ্রমণকারীদের মধ্যে গুটিবসন্ত মহামারীরূপে দেখা দিলে আক্রান্ত যাত্রীদের দ্রুত এই প্রতিষেধক দেওয়া হয়।
স্যালভারসান
১৯১০ সালে পাওয়েল হারলিস সিফিলিস রোগের সংক্রমণের প্রতিরোধে স্যালভারসন প্রতিষেধক হিসেবে প্রথম পরিচয় করিয়ে দেন। তাঁর এই বৈপ্লবিক উদ্ভাবনের জন্য এখন তাঁকে কেমোথেরাপির জনক বলা হয়।
ইনসুলিন
১৯২০ সালের শুরুর দিকের কথা। ফ্রেডরিক বেন্টিং এবং তাঁর সহকর্মীরা না খেয়ে থাকা বহুমূত্র রোগীদের শরীর থেকে ইনসুলিন হরমোন আলাদা করেন। তার আগে অল্প কিছু ওষুধ ছিল, যা কি না অনেক রোগীরই উপশমে কাজে লেগেছিল। ইনসুলিন এখন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের প্রধান ওষুধ।
পেনিসিলিন
পেনিসিলিন আবিষ্কৃত হয় ১৯২৮ সালে কিন্তু তখন এটিকে হেলাফেলা করা হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আবার নতুন করে এই প্রতিষেধকটি রোগসংক্রমিত একটি রেঞ্জের সেনাসদস্যদের চিকিৎসায় ব্যবহূত হয়। তারপর থেকে পেনিসিলিন ব্যবহার হচ্ছে নানা রোগের চিকিৎসায়।
ইনোভিড
১৯৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ইনোভিড নামের একটি জন্মনিরোধক ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছিল। আর এই বড়ির উদ্ভাবনের ফলে ঘটে যায় এক বিপ্লব। যার প্রভাবে কোটি কোটি মানুষ বেঁচে যায়। ১৯৭০ সালে এটা যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা সমস্যা দূর করার কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সে সময় অনেক স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞ এটির বিরোধিতা করেছিলেন। বর্তমান সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য এটিই সবচেয়ে উন্নত পদ্ধতি।
থ্যালিডোমাইড
মানসিক অস্থিরতা দমনের এই ওষুধ আবিষ্কৃত হয় ১৯৫০ সালের শেষ ও ১৯৬০ সালের শুরুর দিকে। গর্ভধারণকালীন সময়ে অনেকে ওষুধটি সেবন করেছিলেন। ফলে তাঁদের শিশুরা মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছিল কল্পনাতীতভাবে। চিকিৎসাবিদ্যার যখন চরম দুর্যোগ, তখন এটি একটি আমূল পরিবর্তন এনেছিল পৃথিবীতে। ১৯৯০ সালে থ্যালিডোমাইডকে নতুনভাবে কুষ্ঠ ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসার জটিলতা দূর করার কাজে ব্যবহার করা শুরু হয়।
মোছাব্বের হোসেন
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক
Monday, 6 September 2010
বিশ্ববিখ্যাত গাড়ি
মার্সিডিজ
জার্মানির বিলাসবহুল গাড়ি মার্সিডিজ ১৯০১ সাল থেকে তৈরি হচ্ছে। ডেইমলার গাড়ি কোম্পানির পরিচালক এমিল জেলেনিকের মেয়ের নামে এ গাড়ির নামকরণ করা হয়।
রোলস রয়েস
১৯০৬ সালে বিলাসবহুল গাড়ির জগতে এক নতুন মাত্রা যোগ করে রোলস রয়েস। হেনরি রয়েস ও চার্লস রোলের মিলিত আগ্রহে ব্রিটিশ গাড়ির জগতে বিলাসবহুল এই যানের সূচনা ঘটে। এ কোম্পানির ইঞ্জিন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উড়োজাহাজেও ব্যবহূত হয়।
বুগাত্তি রয়েল
এযাবত্কালের সবচেয়ে বড় গাড়ি হিসেবে পরিচিত বুগাত্তি রয়েল মাত্র ছয়টি তৈরি করা হয়েছে। রাজকীয় এই গাড়ির নকশা করেন ইতালীয় ইত্তোর বুগাত্তি। এটি লম্বায় ৬.৭ মিটার এবং এর ইঞ্জিন ১২.৭ লিটারের, যা বিশেষভাবে উড়োজাহাজের জন্য নকশা করা হয়েছিল। ১৯৮০ সালে এর একটি গাড়ি রেকর্ড পরিমাণে ১৫ মিলিয়ন ডলারে (৯.১ মিলিয়ন পাউন্ড) বিক্রি করা হয়।
ফক্সভাগেন বিটল
১৯৩৭ সালে জার্মানিতে সর্বপ্রথম ফক্সভাগেন বিটল তৈরি হয় এবং এর নকশা করেন ফার্দিনান্দ পর্কি। ২০০৩ সালে যখন এর উত্পাদন শেষ হয়, তখন পর্যন্ত ২১ কোটি ৫২ লাখ নয় হাজার ৪৬৪টি গাড়ি তৈরি হয়। ১৯৯৮ সালে বিটলের নতুন সংস্করণ বাজারে আসে।
মিনি
ব্রিটেনে ১৯৫৯ সালের আগস্টে মিনি গাড়ির যাত্রা শুরু হয়। এ গাড়ির দাম ছিল ৫০০ পাউন্ডের কম। ২০০০ সাল পর্যন্ত ৫.৩ মিলিয়নেরও বেশি মিনি তৈরি করা হয়েছে। এ গাড়ির নকশা করেছিলেন এলিক আইসিগোনিস। ব্রিটিশ গাড়ির মধ্যে মিনিই কেবল এক মিলিয়নের বেশি বিক্রি হয়েছে। নতুন মিনি ২০০১ সালে আবারও যাত্রা শুরু করে।
মিনহুন নাহার
সূত্র: দ্য ওয়ান্ডার ফ্যাক্টস
জার্মানির বিলাসবহুল গাড়ি মার্সিডিজ ১৯০১ সাল থেকে তৈরি হচ্ছে। ডেইমলার গাড়ি কোম্পানির পরিচালক এমিল জেলেনিকের মেয়ের নামে এ গাড়ির নামকরণ করা হয়।
রোলস রয়েস
১৯০৬ সালে বিলাসবহুল গাড়ির জগতে এক নতুন মাত্রা যোগ করে রোলস রয়েস। হেনরি রয়েস ও চার্লস রোলের মিলিত আগ্রহে ব্রিটিশ গাড়ির জগতে বিলাসবহুল এই যানের সূচনা ঘটে। এ কোম্পানির ইঞ্জিন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উড়োজাহাজেও ব্যবহূত হয়।
বুগাত্তি রয়েল
এযাবত্কালের সবচেয়ে বড় গাড়ি হিসেবে পরিচিত বুগাত্তি রয়েল মাত্র ছয়টি তৈরি করা হয়েছে। রাজকীয় এই গাড়ির নকশা করেন ইতালীয় ইত্তোর বুগাত্তি। এটি লম্বায় ৬.৭ মিটার এবং এর ইঞ্জিন ১২.৭ লিটারের, যা বিশেষভাবে উড়োজাহাজের জন্য নকশা করা হয়েছিল। ১৯৮০ সালে এর একটি গাড়ি রেকর্ড পরিমাণে ১৫ মিলিয়ন ডলারে (৯.১ মিলিয়ন পাউন্ড) বিক্রি করা হয়।
ফক্সভাগেন বিটল
১৯৩৭ সালে জার্মানিতে সর্বপ্রথম ফক্সভাগেন বিটল তৈরি হয় এবং এর নকশা করেন ফার্দিনান্দ পর্কি। ২০০৩ সালে যখন এর উত্পাদন শেষ হয়, তখন পর্যন্ত ২১ কোটি ৫২ লাখ নয় হাজার ৪৬৪টি গাড়ি তৈরি হয়। ১৯৯৮ সালে বিটলের নতুন সংস্করণ বাজারে আসে।
মিনি
ব্রিটেনে ১৯৫৯ সালের আগস্টে মিনি গাড়ির যাত্রা শুরু হয়। এ গাড়ির দাম ছিল ৫০০ পাউন্ডের কম। ২০০০ সাল পর্যন্ত ৫.৩ মিলিয়নেরও বেশি মিনি তৈরি করা হয়েছে। এ গাড়ির নকশা করেছিলেন এলিক আইসিগোনিস। ব্রিটিশ গাড়ির মধ্যে মিনিই কেবল এক মিলিয়নের বেশি বিক্রি হয়েছে। নতুন মিনি ২০০১ সালে আবারও যাত্রা শুরু করে।
মিনহুন নাহার
সূত্র: দ্য ওয়ান্ডার ফ্যাক্টস
Subscribe to:
Posts (Atom)