Wednesday, 30 June 2010

Poem of Robert Frost

Tree at My Window

Robert Frost
Tree at my window, window tree,

My sash is lowered when night comes on;

But let there never be curtain drawn

Between you and me.

Vague dream-head lifted out of the ground,

And thing next most diffuse to cloud,

Not all your light tongues talking aloud

Could be profound.

But tree, I have seen you taken and tossed,

And if you have seen me when I slept,

You have seen me when I was taken and swept

And all but lost.

That day she put our heads together,

Fate had her imagination about her,

Your head so much concerned with outer,

Mine with inner, weather.

Tuesday, 29 June 2010

William Shakespeare Quotes

  • A fool thinks himself to be wise, but a wise man knows himself to be a fool.
  • A man loves the meat in his youth that he cannot endure in his age.
  • A peace is of the nature of a conquest; for then both parties nobly are subdued, and neither party loser. 
  • Absence from those we love is self from self - a deadly banishment.
  • All the world's a stage, and all the men and women merely players: they have their exits and their entrances; and one man in his time plays many parts, his acts being seven ages.
  • Ambition should be made of sterner stuff.
  • An overflow of good converts to bad.
  • And oftentimes excusing of a fault doth make the fault the worse by the excuse.
  • And this, our life, exempt from public haunt, finds tongues in trees, books in the running brooks, sermons in stones, and good in everything.
  • As flies to wanton boys, are we to the gods; they kill us for their sport.
  • As he was valiant, I honour him. But as he was ambitious, I slew him.
  • As soon go kindle fire with snow, as seek to quench the fire of love with words.
  • Be not afraid of greatness: some are born great, some achieve greatness, and some have greatness thrust upon them.
  • Being born is like being kidnapped. And then sold into slavery.
  • Better a witty fool than a foolish wit.
  • Better three hours too soon than a minute too late.
  • Boldness be my friend.
  • Brevity is the soul of wit.
  • But men are men; the best sometimes forget.

তোমার আমার গল্প - নির্মেলেন্দু গুন

বনলতা সেন - জীবনান্দ দাস


এইটা আমার একটা খুব প্রিয় কবিতা. তাই ব্লগ-এ সংগ্রহে রাখলাম .

Monday, 28 June 2010

Few words about Blog

Define: blog


There are different descriptions of that concept. According to most of the articles on the Internet 'blog' is short for 'weblog', a frequently updated publication of comments and thoughts on the web. Usually it is reflecting the views of the blog's creator. Blogs consist of text and images and are sorted by date. The newest information is on the top and there is an archive of the old one. People create blogs to share their thoughts with the world. A person writing in the journal is called a 'blogger'. Bloggers write about different topics: from the typical daily situations to the progress of some scientific researches. The readers also can leave comments and thus make the whole blog more interesting and useful.



History of the blog

Blogs are part of the World Wide Web since its creation. In the beginning they did not have a defined name, but their purpose was more or less the same as that of contemporary blogs. Here is a list of the first blogs:



Dawn of Internet: Tim Berners-Lee at CERN begins keeping a list of all new sites as they come online.

June 1993: NCSA's oldest archived 'What's New' list of sites.

June 1993: Netscape begins running it's 'What's New!' list of sites.

January 1994: Justin Hall launches Justin's Home Page which would become Links from the Underground.

April 1997: Dave Winer launches Scripting News.

December 1997: Jorn Barger coins the term 'weblog''.

Thursday, 24 June 2010

মাউস ছাড়াই চালাতে পারবেন কম্পিউটারের সকল প্রোগ্রাম।

ধরুন আপনার একটি এমএস ওয়ার্ড ফাইল তৈরি করা দরকার কিন্তু মাউস নেই এসময় কি করবেন ?

ফলো করুন নিচের কমান্ডগুলো আর জেনে নিন মাউস ছাড়া কম্পিউটার চালানোর উপায়........


১. কী-বোর্ড থেকে স্টার্ট বাটন চাপ দিন। হয়তবা পতাকার মত একটি বাটনও আপনার কম্পিউটারে থাকতে পারে মূলত ওটিই হচ্ছে স্টার্ট মেনু।

২. এখন আপনি চলে যান All Programs এ। কী-বোর্ড এর এ্যারো কী ব্যবহারের মাধ্যমে মাইক্রোসফট অফিস। এখানে Enter ক্লিক করে আবার এ্যারো কী ব্যবহার করুন এবং বেছে নিন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড। এখানে Enter প্রেস করলেই Open হবে আপনার এই প্রোগ্রাম।
৩. এখন নতুন পেইজ চাইলে প্রেস করুন Alt+F এবং New page এ গিয়ে Enter দিন। এরপর যা কিছু লিখেন, কোন ফাইল বা ছবি যোগ করার জন্য আবার Alt+F দিন।

৪. Open option এ গিয়ে নির্দিষ্ট ফোল্ডার ওপেন করতে দুই তিনবার Tab চেপে Enter দিন। ফোল্ডার ওপেন হবে।নির্দিষ্ট ফাইল বা ছবি বেছে নিয়ে Enter দিন।

৫. একইভাবে Alt+F চেপে ফাইলকে Save বা Close করে Exit চেপে বন্ধ করুন।

৬. এভাবে একই পন্থায় স্টার্ট বাটন চেপে কম্পিউটার Shut down করা যায়।



পুরো ব্যাপারটা একবার নিজে প্রাকটিস করে দেখুন কখনও কাজে লাগলেও লাগতে পারে।



মাউস ছাড়া মাউস পয়েন্টারকে দিয়ে মাউসের মত কাজ করা যায়। শিক্ষে নিন মাত্র তিনধাপে..

১. প্রথমেই চলে যান Start Menu > Setting > Control Panel.

২. এবার Accessibility option এ ডাবল ক্লিক করুন।

৩. Mouse Tab ক্লিক করুন এবং Use Mouse Keys এ টিক চিহ্ন দিন। এখানে সেটিং থেকে মাউসের স্পীড বাড়িয়ে দিলে একটু ভাল ফল পাওয়া যায়।

ব্যাস আপনার কাজ শেষ। এবার কী-বোর্ড এর Num Lock ক্লিক করে 4,8,6,2 বাটন চারটি মাউসকে স্থানান্তরে ব্যবহার করুন এবং 5 কে Enter এর জন্য ব্যবহার করুন।

তবে একটা বিষয় জেনে রাখা দরকার যে এই সিস্টেম ব্যবহার করলে আপনি ক্যালকুলেটর সাইটি ব্যবহার করতে পারবেন না তবে এজন্য আপনি কী-বোর্ড এর উপরের প্রান্তের সংখ্যাগুলো ব্যবহার করতে পারবেন।

Wednesday, 23 June 2010

রুশ রস

জবর জীবজগৎ

 কে বেশি বিচক্ষণ, তা নিয়ে তর্ক চলছে বানর আর তোতাপাখির মধ্যে। বানর বলল, ‘অবশ্যই আমি বেশি বিচক্ষণ। লক্ষ করে দেখো, দেখতে আমি প্রায় মানুষের মতো। মানুষের মতো হাঁটতেও পারি। সবচেয়ে বড় কথা, মানুষের উৎপত্তি হয়েছে আমাদের থেকে।’

‘তা না হয় বুঝলাম,’ বলল তোতাপাখি, ‘কিন্তু আমি তো মানুষের মতো কথা বলতে পারি। তুমি পারো?’

‘পারি না মানে! এতক্ষণ ধরে আমি কী করলাম?’



 নেকড়ের সঙ্গে দেখা খরগোশের। খরগোশ বলল, ‘তোমার বউটা যা সুন্দরী!’

নেকড়ে বলল, ‘তোমার বউটা যা সুস্বাদু!’



 টেলিফোন বেজে উঠল পুলিশ অফিসে। রিসিভার তুলতেই শোনা গেল, ‘বাঁচান! বাঁচান!’

‘এক্ষুনি রওনা হচ্ছি। কী হয়েছে, বলুন।’

‘ঘরে বেড়াল ঢুকেছে,’ উত্তর এল অপর প্রান্ত থেকে।

‘এই ফালতু কারণে পুলিশকে কেউ জ্বালাতন করে! কে আপনি?’

‘তোতাপাখি।’



 শেয়াল ধরেছে মুরগিছানাকে। বেচারা কেঁদে-কেটে একাকার। খুব অনুনয়-বিনয় করে সে বলল, ‘আমাকে ছেড়ে দাও, শেয়াল ভায়া। আমি আমার বাবা-মাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে তোমার কাছে নিয়ে আসব।’

শেয়াল হিসাব করে দেখল, পুঁচকে এই মুরগিছানাকে খাওয়ার চেয়ে বড় দুখানা মোরগ-মুরগি খাওয়া ঢের লাভজনক। সে ছেড়ে দিল মুরগিছানাকে। ছাড়া পেয়ে একছুটে দূরে গিয়ে বলল সে, ‘শেয়াল ভায়া, আমি তোমাকে ঠকিয়েছি। আমার বাবা-মা নেই। আমার জন্ম ইনকিউবেটরে।’
 
 
সংকলন ও অনুবাদ মাসুদ মাহমুদ

Monday, 21 June 2010

বি শ্ব কা পে র রে ক র্ড

  সবচেয়ে বেশি গোল—১৫, রোনালদো (ব্রাজিল)।

 এক টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি গোল—১৩, জাঁ ফন্টেইন।

 এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি গোল—৫, ওলেগ সালেঙ্কো (রাশিয়া-ক্যামেরুন, ১৯৯৪)।

 সবচেয়ে বেশি হ্যাটট্রিক ২টি—স্যান্ডর ককসিস (হাঙ্গেরি, ১৯৫৪), জাঁ ফন্টেইন (ফ্রান্স, ১৯৫৮), জার্ড মুলার (জার্মানি, ১৯৭০) এবং গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা (আর্জেন্টিনা ১৯৯৪ ও ১৯৯৮)।

 সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা—পেলে (ব্রাজিল, ১৭ বছর ২৩৯ দিন)।

 সর্বকনিষ্ঠ হ্যাটট্রিক—পেলে (১৭ বছর ২৪৯ দিন, ব্রাজিল-সুইডেন, ১৯৫৮)।

 সবচেয়ে বেশি বয়সী গোলদাতা—রজার মিলা (৪২ বছর ৩৯ দিন, ক্যামেরুন-রাশিয়া, ১৯৯৪)।

 সবচেয়ে বেশি বয়সে হ্যাটট্রিক—তোরে কেলার (৩৩ বছর ১৫৯ দিন, সুইডেন-কিউবা, ১৯৩৮)।

 সবচেয়ে দ্রুততম গোল—১১ সেকেন্ড; হাকান সুকুর (তুরস্ক-কোরিয়া, ২০০২)।

 সবচেয়ে বেশি গোলের ম্যাচ—আর্জেন্টিনা ৭-৫ সুইজারল্যান্ড, ১৯৫৪।

 সবচেয়ে বেশি ম্যাচে গোল না খাওয়া গোলরক্ষক—১০ ম্যাচ, পিটার শিলটন (ইংল্যান্ড, ১৯৮২-১৯৯০) ও ফাবিয়েন বার্থেজ (১৯৯৮-২০০৬)।

 সবচেয়ে বেশি সময় গোল না খাওয়া গোলরক্ষক—ওয়াল্টার জেঙ্গা, ৫১৭ মিনিট (ইতালি, ১৯৯০)।

 সবচেয়ে বেশি গোল খাওয়া গোলরক্ষক—২৫ গোল, আন্তোনিও কারবাজাল (মেক্সিকো) ও মোহামেদ আল-দিয়াইয়া (সৌদি আরব)।

 দুবার বিশ্বকাপ জেতা কোচ—ভিওরিও পোজ্জো (ইতালি, ১৯৩৪ ও ১৯৩৮)।

 বিশ্বকাপে পাঁচটি ভিন্ন দেশের কোচ—বোরা মিলুটিনোভিচ (মেক্সিকো ১৯৮৬, কোস্টারিকা ১৯৯০, যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৪, নাইজেরিয়া ১৯৯৮, চীন ২০০২)।

 সবচেয়ে বেশি বয়সী কোচ—সিজার মালদিনি (৭০ বছর ১৩১ দিন, প্যারাগুয়ে ২০০২)।

 খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে টুর্নামেন্ট জয়—মারিও জাগালো ও ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার।

 সবচেয়ে দ্রুত লালকার্ড—৫৬ সেকেন্ড, হোসে বাতিস্তা (উরুগুয়ে-স্কটল্যান্ড ১৯৮৬)।

 বেঞ্চে থেকেও লাল কার্ড দেখা ফুটবলার—ক্লদিও ক্যানিজিয়া (আর্জেন্টিনা-সুইডেন, ২০০২)।

 এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি দর্শক—১ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৪; মারাকানা, ব্রাজিল-উরুগুয়ে; ১৯৫০।

 সবচেয়ে কম দর্শক—৩০০; রুমানিয়া-পেরু ১৯৩০।
 
* সংগ্রহ - সুত্র: প্রথম-আলো

জিন-নকশার উন্মোচনে বদলে যাবে পাট

২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশের সোনালি আঁশের জিন-নকশা উন্মোচনের কথা বলে আসছে বিজ্ঞান প্রজন্ম। অবশেষে সেই পাটের জিন-নকশা উন্মোচিত হলো বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে বাংলাদেশেরই একঝাঁক নতুন প্রজন্মের বিজ্ঞানকর্মীর হাতে। এ নিয়ে বিশেষ আয়োজন




এ গল্পের শুরুটা নানাভাবে হতে পারে। এটির শুরু হতে পারে হাওয়াই দ্বীপের পেঁপের জিন-নকশা উন্মোচনে কিংবা মালয়েশিয়ায় রাবারের একই ঘটনায়। তবে আমরা যদি চাই, তাহলে এ গল্পের শুরু হতে পারে একজন পাদ্রির কৌতূহল নিয়ে। পাদ্রি গ্রেগর জোহান মেন্ডেল জীবনের বৈশিষ্ট্য নিয়ে চিন্তা করছিলেন। লম্বা আর খাটো মটরশুঁটির বৈশিষ্ট্য কীভাবে বংশ-বংশানুক্রমে প্রবাহিত হয়, সেটি জানতে গিয়ে তিনি সূচনা করেন এক নতুন বিজ্ঞানের। তাঁর হাত ধরে মানুষ জানতে পারে, দেখতে যেমনই হোক, বহিরাবরণে যা-ই থাক, জীবনের বৈশিষ্ট্যেরও একক আছে। তাঁর রকমফের থেকে জীবনের নানা প্রকাশ। পাদ্রি মেন্ডেলের এই বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ড সেভাবে কারও নজরে আসেনি। শখানেক বছর পর নতুনভাবে আমরা তাঁর কথা জানলাম। আস্তে আস্তে একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পেতে শুরু করল বংশগতির বিজ্ঞান। আমরা জানলাম, জীবনের বৈশিষ্ট্যের একক হলো জিন, আর সেই বিজ্ঞান হলো জেনেটিকস।

তারপর আবার একটি লাফ। ৫০ বছর পর, আমাদের গল্পের নতুন এপিসোডের জোড়া নায়ক ওয়াটসন আর ক্রিক। দুজনের হাত ধরে আমরা জেনে গেলাম, জিনমাত্রই আসলে একধরনের এসিডের চাঞ্চল্য। নিউক্লিক এসিড (ডি-অক্সিরাইবো বা রাইবো)। পুরোটা বললে ডিএনএ (ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড ও আরএনএ (রাইবো নিউক্লিক এসিড)। ডিএনএর কাজ হলো, জীবনের জন্য কী ধরনের প্রোটিন বানাতে হবে, সেটির নির্দেশনা ধরে রাখা। আর আরএনএর কাজ হলো, সেই বার্তাটা বয়ে নিয়ে যাওয়া। তার মানে দাঁড়াল, জীবন শেষ বিচারে ডিএনএ বা আরএনএর দৌড়ঝাঁপ। একজন মানুষের চোখের রং নীল হবে না কালো হবে, তার তথ্যটি প্রথম মাতৃকোষেই লেখা থাকে! লেখা থাকে ডিএনএর দ্বিসূত্রকের বিন্যাসে। মাতৃকোষের বিভাজন থেকে শরীর গঠনের একপর্যায়ে চোখ গঠিত হয়। তখন আদি কোষের ডিএনএন থেকে আরএনএ নীল চোখের বার্তা পৌঁছে দেয় সেখানে। আমরা দেখি নীল নয়নাকে।

এভাবে আসলে সব জীবকোষের সব বৈশিষ্ট্য সঞ্চিত আছে জিনে। মোদ্দাকথা, কোনো জীবের জীবনকে বুঝতে চাও, তার জিনের অনুক্রম বা বিন্যাসটা জেনে নাও।

জিনবিজ্ঞানের মূল বিষয়টি আসলে এটাই। জীবনরহস্যের সমাধান জিন-নকশা।

এবার আমরা আমাদের গল্পে একটি বিরতি নিই। আমরা ফিরে আসি আমাদের জন্মভূমিতে, এই বাংলায়।

বাংলার কৃষকের হাত ধরে বিকশিত হয়েছে নানা জাতের ধান। এর কোনোটি লবণ সহ্য করতে পারে, কোনোটি বন্যার পানিতে দাঁড়িয়ে থাকে, কোনোটি অল্প দিনে ফসল দিতে পারে। মেন্ডেল আর ক্রিকের বুদ্ধি দিয়ে আমরা বলতে পারি, এগুলোর আলাদা বৈশিষ্ট্যের কারণ যে জিন, সেগুলো প্রকাশিত। নানা ধরনের বৈশিষ্ট্যের ধান থেকে আমরা বাছাই করতে পারি আমাদের যেমনটি চাই, মোটামুটি সে ধরনের কিছু। সেগুলোকে আমরা নিয়ে যেতে পারি মাঠে। তাদের মধ্যে আমরা মুক্ত ব্রিডিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারি, ঠিক যেমনটি মেন্ডেল করেছিলেন, তবে আরও আধুনিকভাবে। ফল হিসেবে আমরা উচ্চফলনশীল ধান পেয়ে যাব। পেয়েছিও। ষাটের দশক থেকে শুরু হওয়া আমাদের ধানবিপ্লবে, ধান নিয়ে আমাদের ষাট-সত্তর-আশির দশকের বিপ্লবের মূলে ওই ব্রিডিংই।

ধানের কথা বললে আসে আমাদের সোনালি আঁশের কথা! পাট কেন সোনালি, স্বর্ণের রং বলে! পাঠক, আমাকে মারতে আসবেন। কারণ পাট তো দেখতে স্বর্ণালি নয়। তবুও কেন সে সোনার উপমা। কারণ আর কিছুই নয়, পাটের অর্থমূল্য। বাংলার মাটি পাট চাষের উপযোগী। পাটপণ্যের চাহিদা একসময় ছিল বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। ফলাফল পাটের এ অঞ্চলের, বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল হয়ে ওঠা। পাট হয়ে ওঠে আমাদের জন্য সোনার উপমা, স্বর্ণালি আশা।

সব আশার সঙ্গে নিরাশাও থাকে। উন্নত বিশ্বে হঠাৎ করে আবির্ভূত হয় প্লাস্টিক পণ্য, পলিথিন, কৃত্রিম তন্তু। রাতারাতি পরিবেশবান্ধব পাট হারিয়ে যায়। আমাদের পাটও হারিয়ে ফেলে তার স্বর্ণচ্ছটা। তবে দিনের আবার বদল হয়। মানুষ টের পেয়ে যায়, তার উৎপাদিত প্লাস্টিক পরিবেশের বারোটা বাজিয়ে ফেলছে। শুরু হয় আবার পরিবেশবন্ধুর সন্ধান। উঁকি দেয় ফের পাটের স্বর্ণালি আশা।

তবে তত দিনে পদ্মার জল গড়িয়েছে অনেক। পুরোনো পাটে কিন্তু পারা যাবে না সবার সঙ্গে, বিশেষ করে প্লাস্টিকের সঙ্গে। চাই নতুন পাট। কেমন সেটা? যেমন আমাদের ধবধবে পাটের জাত। এটিতে লিগানিন কম। ফলে তন্তুটা ভালো, মিহি। কিন্তু ঝামেলা হলো, এটি বড়ই স্পর্শকাতর। পোকার আক্রমণ মোটেই সহ্য করতে পারে না।

অথবা পোকার আক্রমণ ঠেকাতে পারে এমন পাট। কিন্তু সেটিতে লিগানিন বেশি। পচানোর জন্য জাগ দিতে হয়, প্রচুর পানি লাগে। কাজেই লিগানিন কমওয়ালা পাট দরকার। কীভাবে পাওয়া যাবে? ধানের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা ভাবলাম, প্রকৃতিতেও নিশ্চয়ই এমন পাট আছে। আমাদের কাজ হবে একটির বৈশিষ্ট্য আরেকটিতে ঢুকিয়ে দেওয়া। আর তা করতে গিয়েই আমরা পড়লাম বিপদে। কারণ, ধানের মতো হাজার জাতের পাট যে নেই! হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি জাতের পাট। কাজেই কেমন করে ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য আমরা পাব?

বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরাও ভাবেন। উন্নত জাতের পাটের উদ্ভাবন কেমন করে হবে। ঢাকার পাট গবেষণাগারে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে কিংবা আলোচনায়, টেক্সাসের গবেষণাগারে বাংলাদেশের বিজ্ঞানী—সবাই ভাবেন। আর শেষ পর্যন্ত তাঁরা ফিরে আসেন মেন্ডেল-ওয়াটসন আর ক্রিকের গল্পে। আমরা বুঝতে পারি, উন্নত জাতের পাট পেতে হলে আমাদের জানতে হবে পাটের মুক্ত বৈশিষ্ট্যের রহস্য, এর জিন-নকশা। পুরো জিন-নকশা জানার পর আমরা ঝাঁপিয়ে পড়তে পারব তার সদস্যদের চেনার কাজে। কোন জিন বাবাজি লিগানিনের প্রাবল্যের জন্য দায়ী, কোন জিনের অনুপস্থিতির জন্য বেচারা ধবধবে পাট হেরে যায় পোকার কাছে। যদি আমরা সেটা জানতে পারি, তাহলেই আমরা আমাদের স্বপ্নের পাট পেয়ে যাব। এটা শুধু যে বাংলাদেশ জানল তা নয়, জানল পাট উৎপাদনকারী সব দেশই। শুরু হলো এক নতুন, অদৃশ্য লড়াই। কে সবার আগে এই জিন-নকশা উন্মোচন করবে। এবার আমরা পাটের গল্প থেকে ‘একটি ছোট্ট বিরতি’ নিই।

জিন-নকশা উন্মোচনের কাজটি সহজ নয়। এর আগে মাত্র ১৬টি উদ্ভিদের সম্পূর্ণ জিন-নকশা উন্মোচিত হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয় হলো, এর মধ্যে দুটোই হয়েছে এক কীর্তিমান বাঙালির হাত ধরে। তাহলে তো কাজটা অনেক সহজ হয়ে গেল, তাই না। বাংলাদেশের পাটের জিন-নকশা উন্মোচিত হবে বাঙালি বিজ্ঞানীরই হাতে। ফরিদপুরের বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলমের হাতেই তবে হোক আমাদের সোনালি আঁশের সোনালি দিনের আহ্বান।

এ গল্পের পরের একটি এপিসোড এখন সারা বিশ্বের সবারই জানা। বাংলাদেশ সরকারের অর্থানুকূল্যে মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে পাটের জিন-নকশা উন্মোচিত হয়েছে।

জিন-নকশার এই উন্মোচন দুটি নতুন আলো দেখিয়েছে। প্রথম আলোর কথা আমি বলেছি শুরুতে। নতুন উন্নত জাতের পাট। কাজটি হবে ফাংশনাল জেনোমিকসের হাত ধরে। প্রথমে পাটের জিনগুলোর কোনটি কোন বৈশিষ্ট্যের, সেটি জানার মাধ্যমে। এর পর করতে হবে তার ব্যঞ্জনা। কোনটি থাকবে, কোনটি থাকবে না—কীভাবে কেটে, কীভাবে সাজালে আমরা পেয়ে যাব স্বপ্নের পাট। দীর্ঘ ও লম্বা সময়ের কাজ। হয়তো বছর পাঁচেক লেগে যেতে পারে।

দ্বিতীয় যে আলো দেখিয়েছে এই প্রকল্প, তা আমাদের নতুন প্রজন্মের আলো। আমাদের নতুন প্রজন্মকে এ কাজে যুক্ত করা তাদের গড়ে তোলা। সেটিও হয়েছে সার্থকভাবে। আমরা দেখেছি, যে কাজের জন্য অন্যান্য দেশের বিজ্ঞানীদের প্রাতিষ্ঠানিক বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন, সে কাজ আমাদের নতুন প্রজন্ম করেছে কাজ করতে করতে। এই নতুন প্রজন্মের মাধ্যমে গড়ে উঠবে আমাদের বায়োটেকনোলজির নতুন ভুবন। তথ্যপ্রযুক্তি আর বায়োটেকনোলজির হাতে হাতে ধরে রচিত হবে আমাদের দিনবদলের নতুন কাব্য। এর কোনটিতে মূখ্য হবে পাট বা ধান, কোনটি জুড়ে থাকবে নতুন কোন প্রাণরক্ষাকারী ওষুধ।

আমরা অপেক্ষায় থাকলাম।
 
সংগ্রহ: প্রথম-আলো
মুনির হাসান

তারিখ: ২০-০৬-২০১০